
রাজধানীর উত্তরায় ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে আহ্ছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (AUST) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ফাহিম ও তার পরিবারের দুই সদস্যের। মর্মান্তিক এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উত্তরা আজমপুর এলাকায়। পুলিশ জানায়, হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাক ফুটপাথে উঠে যায়। এসময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ফাহিম, তার বাবা ও ছোট ভাই ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
ফাহিমের সহপাঠীরা বলছেন, এ মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নয়—এটি রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনার নির্মম ফল। ‘‘একজন মানুষ ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকবে আর ট্রাক গিয়ে তাকে পিষে মারবে—এটা কেমন রাষ্ট্র, কেমন নিরাপত্তা?’’—এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন তারা।
ঘাতক ট্রাকচালককে আটক করা গেলেও ট্রাকটির মালিক এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি নিয়েই শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, ‘‘আজ ফাহিম, কাল আমি। আমাদের কারও জীবন নিরাপদ নয়। এমন ঘটনার বিচার না হলে এই মৃত্যু থামবে না।’’
ফাহিমের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আগামীকাল (রবিবার) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় গেটের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের একটাই দাবি—ঘাতক চালকের সঙ্গে সঙ্গে মালিককেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। ‘‘আমরা শুধু শোক করতে চাই না, ন্যায়বিচারও চাই। এই হত্যাকাণ্ডের জবাব রাষ্ট্রকে দিতেই হবে,’’ বলেন একজন শিক্ষার্থী।
প্রসঙ্গত, সদাহাস্য ফাহিম ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ৩.১ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনাই ছিল তার স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন থেমে গেল ফুটপাতে, এক নির্মম চক্রে।