
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে হেনস্তা ও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো. আজিম রানা ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। আজ রোববার উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী পূর্বকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভৈরব থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে।
অভিযুক্ত আজিম রানা উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও পূর্বকান্দা গ্রামের মো. এলাছ উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক এ কে এম মাসুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই বছর ধরে আজিম রানা স্কুলে এসে উৎপাত করত। বিভিন্ন সময়ে স্কুলের বেঞ্চ ও জিনিসপত্র জোর করে নিয়ে যেত। প্রতিবাদ করলেই অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি ও মারতে আসত। এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। তার ভয়ে চুপ থাকতে হয়।
ছয় মাস আগে স্কুল থেকে বেঞ্চ নিয়ে গেলে দপ্তরিকে সঙ্গে নিয়ে তখন তার বাড়িতে গেলে গালাগালি করে হুমকি দেয়। গেল ঈদের বন্ধের সময় সে কাউকে না জানিয়ে স্কুলের পানির ট্যাংক থেকে পাইপ লাগিয়ে পুকুরে পানি দেওয়ায় পাম্প পুড়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সে একজন মাদক কারবারি। প্রায় সময়ই দপ্তরির রুমে এসে জোর করে মাদক সেবন করত। বাধা দিলে উগ্রতা বেড়ে যেত। অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তার মায়ের কাছে বিচার দেওয়ার জেরে আজ দুপুরে স্কুলের অফিস রুমে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং একপর্যায়ে আমার শার্টের কলার ও গলা চেপে ধরে মারধর করে।
এ সময় অন্য শিক্ষকেরা এসে অফিস রুমের দরজা বন্ধ করে দেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ফোনে শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে জানালে তখন তিনি থানায় যোগাযোগ করে পুলিশ পাঠান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আমাকে উদ্ধার করে এবং সবকিছু নোট করে নিয়ে যায়।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজিম রানা ভূঁইয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজিম রানা একজন মাদক কারবারি। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্রসহ বেশ কিছু মামলা রয়েছে। তাঁর আরেক ভাই মাসুদ ভূঁইয়া ডাকাতি মামলায় কারাগারে। তাঁদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তাঁরা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, স্কুল চলাকালে আজিম রানা অফিস রুমে ঢুকে প্রধান শিক্ষক এ কে এম মাসুদ রানাকে হেনস্তা ও মারধর করেছেন। এ ঘটনায় যুবকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভৈরব থানার উপপরিদর্শক মো. ফরিদুজ্জামান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অফিস রুম থেকে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করি। তাকে লাঞ্ছিত ও মারধর করার সত্যতা পাওয়া যায়। এ ঘটনায় জড়িত যুবককে আটক করতে তার বাড়িতে গিয়ে পাইনি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’