Image description

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উপসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ এমন একটি শাসনের মধ্য দিয়ে গেছে যা, 'নির্বাচনকে প্রহসনে, ভিন্নমতকে রাষ্ট্রদ্রোহে এবং সংবাদপত্রকে সহজে বাস্তবায়নের কারাওকে মেশিনে পরিণত করেছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শুধু দেশ পরিচালনায়ই সন্তুষ্ট থাকেনি, তিনি সত্যকে চাপা দিয়ে একচেটিয়া আধিপত্যসহ এটির মালিক হতে চেয়েছিল। আজ সোমবার (৬ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

ফেসবুকে অপূর্ব লেখেন, 'তা সত্ত্বেও অনেক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্দিরা গান্ধীর মতো ত্রাণকর্তা হিসেবে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের পুনর্জন্মের মতো তুলে ধরেছে। সংবাদের শিরোনামে শেখ হাসিনাকে 'আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার রক্ষক, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রানী, সন্ত্রাসবিরোধী চ্যাম্পিয়ন' হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।’

প্রেস উপসচিব আরও লেখেন,  বলেন, ‘সব সময়, আপনারা যত্ন সহকারে তার সংকলিত বক্তব্যের দুর্বলতাগুলো কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। গুম, মিডিয়ার ওপর চাপ এবং কারচুপির নির্বাচন, যা এমনকি সবচেয়ে চরম স্বৈরশাসককেও লজ্জা দেবে। কিন্তু এই বিশেষ নায়িকাকে পেয়ে গেলে তথ্য নিয়ে মাথা ঘামাবেন কেন, তাই না?'

প্রেস উপসচিব বলেন, ‘ভারতের রাজনৈতিক অভিজাতরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে ‘অনুগত ছোট ভাই- তিরস্কার, সহযোগিতা এবং নিয়ন্ত্রণের জাতি’ হিসাবে দেখেছে। ওই বাক্সে হাসিনা নিজেকে খুব সুন্দরভাবে ফিট করেছেন। ‘তিনি আপনাদেরকে সীমান্ত চুক্তি, সংযোগ চুক্তি এবং আপনার নিজের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের বিরুদ্ধে দৃঢ় হাত দিয়েছেন। প্রতিদান হিসেবে আপনারা তার স্বৈরাচারী প্রবণতার প্রতি চোখ বন্ধ করে রেখেছেন, তার রাজত্বকে গণতন্ত্রের এক দীর্ঘ, গৌরবময় দুর্গাপূজা হিসাবে ঘুরিয়েছেন।’

অপূর্ব বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও সত্যিকারের জনসেবার নতুন পথ বেছে নিচ্ছে, তখন ‘আপনারা গতি পরিবর্তন করেছেন। হঠাৎ করে, আমাদেরকে 'স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি' হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছে, একটি দুর্বৃত্ত উপাদান যা ‘পাঠান’ এর পরবর্তী খলনায়ক আরামদায়ক স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করে। মনে রাখবেন, শেখ হাসিনা যে গণতান্ত্রিক অধিকার পিষ্ট করেছিলেন, তা ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের দায়িত্ব হলো সে যা ভেঙেছে তা ঠিক করা।’

তবে এখানে একটি গোপন কথা উল্লেখ করে প্রেস উপসচিব বলেন, 'বাংলাদেশ আপনাদের ঘুঁটি নয়, কখনোই ছিল না। আমরা এখানে আপনার ভূ-রাজনৈতিক সুরে দ্বিতীয় বেহালা বাজাতে আসিনি। আমরা অবশ্যই এখানে আপনার প্রচারকে বাস্তবায়ন করতে আসিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি জাতি যার নিজস্ব স্বপ্ন রয়েছে। ‘আমাদের নিজস্ব সংগ্রাম এবং হ্যাঁ আমাদের নিজস্ব পছন্দ আছে, আমরা সাহসী, অনুতাপহীন এবং ভুলে যাওয়ার নয়।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের উদ্দেশে অপূর্ব বলেন, 'এখানে একটা উপদেশ আছে, পক্ষপাতিত্বে সহজে যান। একজন নেতার প্রতি আনুগত্যকে একটি জাতির প্রতি আনুগত্য ভেবে ভুল করবেন না। আর আমাদের জন্য? আমরা আরও ভাল কিছু তৈরি করতে থাকব- এমন একটি ভবিষ্যত, যেখানে গণতন্ত্র কোনো আভরণ নয়, মূল জিনিস।’