
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ডাকাতের কিল-ঘুষিতে এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। নিহত খন্দকার শাহ আলম (৪৫) কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়ার মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে উপজেলার কাইতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কুখ্যাত ডাকাত টাইগার বাবুলকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তিনি ‘আলম মিডিয়া’ নামে একটি ফেসবুক টিভি চালাতেন এবং নবীনগর নিউ মডেল প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকার নবীনগর উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। সাংবাদিক শাহ আলম তিন মেয়ে ও এক ছেলের বাবা। তার স্ত্রী সৌদি প্রবাসী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর আনুমানিক ১ টার দিকে সাংবাদিক খন্দকার শাহ আলমের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। পথে একই গ্রামের কুখ্যাত ডাকাত ও একাধিক মামলার আসামি টাইগার বাবুল তাদের গতিরোধ করে মোবাইল ও মালামাল ডাকাতির চেষ্টা চালায়।
খবর পেয়ে সাংবাদিক শাহ আলম ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় টাইগার বাবুলের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে টাইগার বাবুল সাংবাদিক শাহ আলমের বুকে উপর্যুপরি কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এতে শাহ আলম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে টাইগার বাবুলকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
স্থানীয় শিক্ষক আবু নাছিম সরকার ও কণ্ঠশিল্পী দৃষ্টিহীন রবিউল আলম জানান, সাংবাদিক শাহ আলম তার ফেসবুক টিভিতে এলাকার বিভিন্ন ধরনের ভালো খবর তুলে ধরতেন। তারা এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নিহত সাংবাদিকের ভাই নুরুল ইসলামের অভিযোগ, টাইগার বাবুল এলাকায় নিরীহ মানুষের ওপর অন্যায় অত্যাচার, চুরি এবং মহিলাদের উত্ত্যক্ত করত। এসব বিষয়ে শাহ আলম তার মিডিয়ায় লেখালেখি করায় বাবুল ক্ষিপ্ত ছিল এবং সম্ভবত পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
নবীনগর থানার ওসি শাহীনূর ইসলাম শাহিন জানান, দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনায় শাহ আলম মারা গেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত টাইগার বাবুলকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে সে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে রাতে হত্যা মামলা করেন এবং আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নবীনগরে কর্মরত সাংবাদিক মহলে এবং কাইতলা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী বাবুল ডাকাত ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।