Image description

দেশজুড়ে শুরু হতে যাচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষা। এই পরীক্ষার অংশ হওয়ার কথা ছিল ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ— যার পুরো নাম মো. ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া। ২০২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরীক্ষায় বসার কথা ছিল তার। কিন্তু ১৮ জুলাই ধানমন্ডিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে প্রাণ হারান তিনি। বয়স তখন ১৮-র কোঠা ছুঁইছুঁই।

আজ বুধবার (২৫ জুন) ভাই হারানোর বেদনায় নীল ফারহান ফাইয়াজের বড় বোন সাইমা ফারহান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক আবেগঘন পোস্টে লিখেছেন, ‘আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা। যেখানে অনেকেই অংশ নেবে, কিন্তু আমার ভাই আর দিতে পারবে না। ভাইয়া না থাকায় যেন এই পরীক্ষাও একটা শূন্যতা বয়ে আনছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার ভাই এইচএসসি শেষে হায়ার এডুকেশনের জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। ওর এই দেশে চাকরির জন্য আন্দোলনে যাওয়ার দরকার ছিল না। ও রাজপথে নেমেছিল শুধু তার ভাইবোনদের রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য। কিন্তু সেখান থেকেই সে আর ফেরেনি। প্রতিবার মনে পড়লে মনে হয়, কিভাবে একটা কোমল প্রাণকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।’

নিজের ভাইয়ের যত্নবান ও সংবেদনশীল স্বভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘ভাইয়া ত্বকের যত্নে খুব সচেতন ছিল। সামান্য রোদেও ছাতা ছাড়া বের হতো না। স্কিনকেয়ার, খাওয়া-দাওয়ার প্রতিটি বিষয়ে ছিল ভীষণ যত্নবান। সেই ভাই, জুলাই বিপ্লবে সবার সামনে থেকে আন্দোলন করছিল। অথচ সেই সাহসী কণ্ঠকে গুলি করে স্তব্ধ করে দিল স্বৈরাচারী বাহিনী!’

ফেসবুক পোস্টে সাইমা ফারহান আরও লিখেছেন, ‘আজ যখন দেখি, জুলাই বিপ্লবের এই আত্মত্যাগের পরও দেশে বৈষম্য, দুর্নীতি কিংবা অনিয়ম দূর হয়নি, তখন হৃদয় ভেঙে যায়। ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রের। কিন্তু আজো সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে।’