Image description
 

বাংলাদেশে নিযুক্ত কসোভোর রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকালে সাক্ষাতের সময় প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত প্লানাকে তার নিয়োগের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন এবং বাংলাদেশে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

বাংলাদেশের ‘জুলাই অভ্যুত্থানের’ চেতনার প্রতিফলন ঘটিয়ে তিনি স্বাধীনতা, শান্তি ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারের জন্য কসোভোর জনগণের প্রশংসা করেন।

জবাবে রাষ্ট্রদূত প্লানা কসোভো প্রজাতন্ত্রকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানে অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত ১৯৯০ দশকের শেষের দিকে এ অঞ্চলে সশস্ত্র সংঘাতের পরে কসোভোর জীবন পুনর্গঠনে ‘গ্রামীণ কসোভো’র অবদানের কথা স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে মূল্যবান অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি এবং আমি আপনার ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রতিও আমার শ্রদ্ধা জানাতে চাই। আপনার গ্রামীণ ট্রাস্টের উদ্যোগ আমাদের জাতির জন্য একটি বড় সহযোগিতা বয়ে এনেছে। বাংলাদেশ আমাদের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের মূল্যবান অংশীদার। যুদ্ধোত্তর সময়ে কসোভোতে সমর্থন ও অবদানের জন্য আমি বাংলাদেশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদেরও ধন্যবাদ জানাতে চাই।

১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘গ্রামীণ কসোভো’ বর্তমানে কসোভোর শীর্ষস্থানীয় ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা, যার আওতায় রয়েছে দেশের ২১৯টি গ্রাম ও ২০টি পৌরসভা। ঋণগ্রহীতাদের ৯৭ শতাংশই নারী। গ্রামীণ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান।

সেই প্রতিকূল সময়ের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি তার জন্য একটি দারুণ অভিজ্ঞতা।

তিনি বলেন, এটা আমাদের জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল। আমরা যখন সেখানে পৌঁছাই, তখন এটি একটি বিধ্বস্ত জায়গা ছিল। পুরুষরা তখনও ফেরেননি। সে সময় মুদ্রা ছিল না। ব্যাংকিং ব্যবস্থা নেই। আর আমরা সেখানে গ্রামীণ ব্যাংক চালু করেছি শূন্য থেকে।

আলোচনায় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করার ওপরও আলোকপাত করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং হালকা প্রকৌশলসহ সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি সম্ভাবনাময় খাত তুলে ধরেন।

তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে কসোভোর বৃহত্তর বিনিয়োগকে উৎসাহিত করেন।

রাষ্ট্রদূত প্লানা দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার উপায় হিসেবে চেম্বার অব কমার্স এবং শিল্পের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর পক্ষে ছিলেন।

জনগণের মধ্যে বৃহত্তর যোগাযোগের সুযোগ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা কসোভোর বিভিন্ন সেক্টরে আরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বৃত্তি, ফেলোশিপ এবং অ্যাকাডেমিক অনুদানের বিধানের মাধ্যমে কসোভান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের তালিকাভুক্তি বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।