
অবশেষে গোপনে ভারতে পালিয়ে গেলেন তিতাস গ্যাসের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) রনঞ্জয় কুমার দত্ত। পিরোজপুরের কাউখালী শ্রীগুরু সংঘের দায়িত্ব অপর এক ভারতীয় নাগরিক রতন লাল করের ওপর ন্যস্ত করে অতি গোপনে আশ্রম ছাড়েন তিনি। এ নিয়ে ওই এলকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। ‘দুর্নীতির টাকায় ভারতে বিপুল সম্পদ রনঞ্জয়ের’ শিরোনামে গত রোববার তাকে নিয়ে আমার দেশ-এ সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর গ্রেপ্তার আতঙ্কে তিনি আশ্রম ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, তিতাস গ্যাসের সাবেক ডিজিএম রনঞ্জয় ভারতের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও ত্রিশ বছর ধরে তিনি বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, সরকারি দায়িত্ব পালনকালে বৈধ ও অবৈধভাবে অর্জিত শতকোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে পাচার করেছেন। আর এই পাচারের টাকায় ভারতে গড়ে তুলেছেন ৬তলা বিলাসবহুল বাড়ি। কিনেছেন ফ্ল্যাট, একাধিক গাড়ি। গড়েছেন কয়েক একর সম্পত্তিসহ অঢেল সম্পদ।
এই ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন জানান একাধিক বাসিন্দা। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন শুরু হলেও উপজেলা প্রশাসন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত কিংবা কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে কাউখালী এলাকার বাসিন্দা পল্টু লাল বসু জানান, তিতাস গ্যাসের সাবেক ডিজিএম রনঞ্জয় দত্ত ভারতীয় নাগরিকত্ব গোপন রেখে শ্রীগুরু সংঘের সম্পাদক হয়েছেন। সংঘের নিয়মানুযায়ী, কোনো ভারতীয় বা বিদেশি নাগরিক পরিচালনা কমিটির সদস্য থাকতে পারবেন না। কিন্তু রনঞ্জন দত্ত ভারতীয় নাগরিকত্বের তথ্য গোপন করে কমিটির সম্পাদক হয়েছেন। এমনকি তার দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর আরেক ভারতীয় নাগরিক রতন লাল করের ওপর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে গোপনে ভারতে পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে রতন লাল কর আমার দেশকে জানান, তিনি আসলেই ভারতীয় নাগরিক। বাংলাদেশে ব্যবসা করেন। তবে কী করে বাংলাদেশের আশ্রম পরিচালনা কমিটির সদস্য হলেনÑ এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।