
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ সোমবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এই বৈঠককে সৌজন্য মূলক বলে জানানো হয়েছে। বৈঠক ২০ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল বলে সরকারি সুত্রে জানানো হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হামিদুল্লাহর সঙ্গে ছিলেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সিকদার মোহাম্মদ আশরাফুর রহমান।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। হাইকমিশনারের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে জামদানি শাড়ি ও মিষ্টি উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ নয় বছর পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের এই বৈঠক হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশের তৎকালীন হাইকমিশনার মোয়াজ্জেম আলির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মমতা। এরপর আর কোনো বাংলাদেশের হাইকমিশনারের সঙ্গে মমতা বৈঠক করেন নি। বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো পক্ষই কিছু জানায় নি।
রবিবারই হাইকমিশনার কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ ১০ মাসের ব্যবধানে গত মাসে নয়াদিল্লিতে হাইকমিশনার হিসেবে এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ দায়িত্ব নিয়েছেন। কিছু দিন আগেই ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পরিচয়পত্রও পেশ করেছেন তিনি। দায়িত্ব নেবার পর বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত সম্বলিত রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে সফরে এসেছেন। এ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠককে সকলে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেছেন।
পর্যবেক্ষক মহলের মতে, সীমান্ত দিয়ে সন্দেহভাজন বাংলাদেশি হিসেবে ভারতের নাগরিকদের পুশব্যাক নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ। আবার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত কাছারি বাড়িতে হামলার ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে পদক্ষেপ নেবার জন্য চিঠি লিখেছিলেন। মনে করা হচ্ছে ,রবীন্দ্রনাথের বাড়ি ভাঙচুর নিয়ে 'প্রকৃত তথ্য' তুলে ধরা হয়েছে মমতার কাছে। সীমান্ত সমস্যা নিয়েও কথা হয়েছে দুই জনের মধ্যে। আলোচনা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়েও। নদীর পানি বন্টন প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছিল কিনা তা জানা যায় নি।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গিয়েছে, হামিদুল্লার এই সফরে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি রয়েছে। প্রসার ভারতীর সাবেক সিইও তথা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ জহর সরকারের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার প্রাতরাশে জহর সরকারের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন। দু'জনের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের সঙ্গে আলাদা বৈঠক হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।