Image description

দিনাজপুর-২ (বোচাগঞ্জ-বিরল) আসনটি আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি তিন দলের দখলেই থেকেছে। সংখ্যার দিক থেকে পতিত আওয়ামী লীগের দখলেই ছিল বেশির ভাগ সময়। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপটে চিত্র কিছুটা ভিন্ন। এবার আওয়ামী লীগ মাঠছাড়া তাই লড়াইটা হবে মূলত বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে। তবে এ আসনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তাও ফ্যাক্টর হতে পারে। আবার জেলা জামায়াতের আমিরের বাড়িও এই আসনে।

এ আসনে জাতীয় পার্টি ছাড়া সব দলের প্রার্থী প্রকাশ্যে ভোট চাইছেন। প্রার্থীরা মাঠে সভা-সমাবেশ ছাড়াও এলাকায় এবং কেন্দ্রে বিভিন্ন নেতা, জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ্য ও সখ্য তৈরিতে তৎপর। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিতে পারলে এ আসনে লড়াইটা হবে ত্রিমুখী।

বিএনপিতে একাধিক প্রার্থী ও নিজেদের মধ্যে অন্তঃকোন্দলের কারণে তারা কিছুটা বেকায়দায়। পতিত স্বৈরাচারের দোসর হওয়ায় জাপার প্রার্থীও প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। একক প্রার্থী ও আমিরের বাড়ি এ আসনে হওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থায় জামায়াত। এখানে বহিরাগত প্রার্থীর কোনো সুযোগ নেই।

এ আসনে এবার নতুন ভোটার ১২ হাজার ৩৬৬। এর মধ্যে বোচাগঞ্জে ৩ হাজার ৯১২ ও বিরলে ৮ হাজার ৪৫৪ জন। মোট ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৪৫২ ভোটারের মধ্যে বোচাগঞ্জে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৬৮ ও বিরলে ২ লাখ ৩১ হাজার ৪৮৪ ভোটার আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে দিনাজপুর নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।

 

প্রার্থীরা নির্বাচনী এলাকায় ভোটার, জনপ্রতিনিধি, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সামাজিক সংগঠনগুলোর প্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। খবর নেই অন্যান্য ইসলামি দল, বামদল, নতুন গঠিত দল ও ছোট ছোট দলের প্রার্থীদের। তবে নতুন গঠিত দল এনসিপি তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও কৌশলগত কারণে তারা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছে না বলে জানা গেছে।

এই আসনে বোচাগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৯০৮ ও বিরল উপজেলায় ৪ হাজার ১৮৮ জন ভোটার কর্তন করা হয়েছে।

দেশ স্বাধীনের পর থেকে বিভিন্ন সময় নতুন নতুন জেলা যেমন হয়েছে, তেমনি ১৯৮৬ সালে সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী এলাকা পুনর্গঠিত হয়েছে। সে হিসেবে দিনাজপুর-২ (বোচাগঞ্জ- বিরল) আসনে ১৯৮৬ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন সতীষ চন্দ্র সরকার (আওয়ামী লীগ), ১৯৮৮ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন রেজাউল হক চৌধুরী (জাতীয় পার্টি), ১৯৯১ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন সতীষ চন্দ্র সরকার (আওয়ামী লীগ), ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সৈয়দ মো. মজিবর রহমান (বিএনপি), ১৯৯৬ সালের জুন মাসের নির্বাচনে সংসদ সদস্য ছিলেন সতীষ চন্দ্র সরকার (আওয়ামী লীগ), ২০০১ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান (বিএনপি), ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা চারবার সংসদ সদস্য ছিলেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (আওয়ামী লীগ)।

১৯৭৩ সাল থেকে এই আসনটিতে আওয়ামী লীগ সাতবার, বিএনপি দুবার এবং জাতীয় পার্টি একবার করে জয়লাভ করে।

 

বিএনপিতে একাধিক প্রার্থী ও নিজেদের মধ্যে অন্তঃকোন্দলের কারণে তারা কিছুটা বেকায়দায়। পতিত স্বৈরাচারের দোসর হওয়ায় জাপার প্রার্থীও প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। একক প্রার্থী ও আমিরের বাড়ি এই আসনে হওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে জামায়াত। এখানে বহিরাগত প্রার্থীর কোনো সুযোগ নেই।

এ আসনে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে জামায়াত এগিয়ে। তাদের প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। জাতীয় পার্টির কোনো কাঠামো না থাকলেও তাদের প্রার্থী ব্যক্তিগতভাবে বেশ জনপ্রিয়। তিনি বোচাগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন। বাম ও ইসলামি এবং নতুন নতুন দলগুলোর প্রার্থী কিংবা নেতাকর্মীদের কোনো সাড়াশব্দ শোনা যাচ্ছে না। তবে এখানে লড়াই হবে বিএনপি-জামায়াত ও জাতীয় পার্টি তিনটি দলের মধ্যেই।

আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য সাদেক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ ন ম বজলুর রশিদ কালু, কলেজ শিক্ষক সমিতির (বাকশিস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক বিএনপি নেতা অধ্যাপক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম।

এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আসনটি প্রথমবার পেতে চায় জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ আ ন ম আফজালুল আনাম। একক প্রার্থী হওয়ায় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

এছাড়া এখানে জাতীয় পাটির প্রার্থী কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বোচাগঞ্জ উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জুলফিকার আলী ও বীরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিনুর ইসলাম।

প্রার্থীরা নির্বাচনী এলাকায় ভোটার, জনপ্রতিনিধি, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সামাজিক সংগঠনগুলোর প্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। খবর নেই অন্যান্য ইসলামি দল, বামদল, নতুন গঠিত দল ও ছোট ছোট দলগুলোর প্রার্থীদের। তবে নতুন গঠিত দল এনসিপি তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও কৌশলগত কারণে তারা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছে না বলে জানা গেছে।