Image description
 

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ ২০২৪ সালের শেষে রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকায়। যা গত বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। 

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) সাম্প্রতিক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষে বাংলাদেশিদের নামে সুইস ব্যাংকে জমা রয়েছে ৫৯ কোটি ৮২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, প্রতি ফ্রাঁ ১৫০ টাকা ধরে হিসাব করলে এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮,৯৭২ কোটি টাকা। অথচ ২০২৩ সালের শেষে এই অঙ্ক ছিল মাত্র ২ কোটি ৬৪ লাখ ফ্রাঁ বা প্রায় ৩৯৬ কোটি টাকা।

এক বছরে বাংলাদেশিদের সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে নানা প্রশ্ন উঠেছে—এই টাকার প্রকৃত মালিক কারা? এই বিষয়ে শনিবার (২১ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মন্তব্য করেছেন অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।

তিনি দুটি ডকুমেন্ট সংযুক্ত করে পোস্টে দাবি করেন, এই আমানতের হঠাৎ বৃদ্ধির পেছনে রাজনৈতিক পরিবর্তন ও অর্থ পাচারের আশঙ্কা রয়েছে। 

জুলকারনাইন বলেন, ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করে অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তি, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এবং উপদেষ্টাদের দেখা মিলছে না। তাদের ১৫ বছরে অর্জিত বিপুল সম্পদের বড় একটি অংশ বিদেশে সরিয়ে ফেলার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। 

জুলকারনাইন তার পোস্টে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নাম উল্লেখ করে বলেন, ধরে নিন, তিনি সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ের ব্যাংক থেকে ২০-৩০ মিলিয়ন ডলার সুইস ব্যাংকে স্থানান্তর করলে তার অ্যাকাউন্টে জমা কি বাড়বে না? এটা নিছক একটি উদাহরণ।

তিনি আরও দাবি করেন, সংযুক্ত একটি ডকুমেন্টে দেখা যাচ্ছে, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ব্রিটেনে সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ান রহমানকে ২.৫ মিলিয়ন পাউন্ড বা প্রায় ৪০ কোটি টাকা ধার দিয়েছেন বার্ষিক ৪% সুদে। এটা স্পষ্ট করে দেয় যে উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক ব্যক্তিরা নিজেদের মধ্যে লেনদেন চালিয়ে যাচ্ছেন।

জুলকারনাইন তার ফেসবুকে পোষ্টে বলেন, বিদেশে থাকা বা দেশেই ঘাপটি মেরে থাকা অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি বর্তমান অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেদের টাকাকে নিরাপদ রাখতেই সুইস ব্যাংক বেছে নিচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই এতে আমানতের পরিমাণ বাড়ছে।

তবে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, আমি বলছি না অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবাই পবিত্র কিংবা ছাত্রনেতারা ফেরেশতা। কিন্তু এই আর্থিক প্রবাহের উৎস ও উদ্দেশ্য অবশ্যই তদন্তের দাবি রাখে