Image description

আল্লাহ তাআলা বিবাহকে একটি পবিত্র বন্ধন বানিয়েছেন। বিয়ের মাধ্যমে সামাজিক সম্পর্ক, বংশবৃদ্ধি, গুনাহমুক্তিসহ অনেক ভালো বিষয় রয়েছে। কিন্তু শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কখনো স্বামী-স্ত্রী এই মধুর বন্ধনকে ভেঙে ফেলেন। তাদের মধ্যে তালাক হয়ে যায়। এরপর ভুল বুঝতে পেরে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চান। 

 

এ ক্ষেত্রে ফিরিয়ে নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে অনেকেই ভুল করে বসেন। গুনাহে লিপ্ত হয়ে পড়েন। আজ আমরা তালাক দেওয়ার পর স্ত্রীকে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে কিছু জানবো।

আদতে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে ফেরত নেওয়ার (রুজু করার) সঠিক পদ্ধতি নির্ভর করে তালাকের প্রকার ও পরিস্থিতির ওপর।

তালাকের কিছু প্রকার আছে।

১. তালাকে রাজঈ (رجعي طلاق) প্রথম বা দ্বিতীয় তালাক অর্থাৎ স্বামী প্রথম বা দ্বিতীয়বার তালাক দেয় এবং ইদ্দত শেষ হওয়ার আগেই স্ত্রীকে ফেরত নিতে চায়।

এক্ষেত্রে দুইটি বৈধ পদ্ধতি আছে:

ক. মৌখিকভাবে রুজু ঘোষণা করা: যেমন : আমি তোমাকে ফেরত নিলাম, আমি তোমার সঙ্গে সংসার করতে চাই ইত্যাদি বলা।

খ. কার্যত রুজু (রাতবাস): স্ত্রীকে ইদ্দতের মধ্যে সহবাস করা বা সহবাসের নিয়তে স্পষ্টভাবে সংসার শুরু করা এটাও রুজু হিসেবে গৃহীত হয়।

এই রুজু করার জন্য স্ত্রী বা অভিভাবকের সম্মতি লাগবে না, কারণ তালাকে রাজঈতে ইদ্দতের সময় পর্যন্ত স্ত্রী স্বামীর অধীনে থাকে ।

২. তালাকে বাইন (بائن طلاق) যেখানে তালাকের পর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীকে তালাকে বাইন দেয়। বা শর্তযুক্ত তালাক অথবা খোলা করে। তখন ফেরত নিতে চাইলে মোহরসহ নতুনভাবে বিয়ে করতে হবে।

৩. তালাকে মুগাল্লাযা (তৃতীয় তালাক বা একত্রে ৩ তালাক) 

এক্ষেত্রে সরাসরি রুজু বা পুনরায় বিয়ে করার কোনো সুযোগ নেই। কেবল হিল্লা শরীয়ি অর্থাৎ অন্য স্বামীর সঙ্গে বৈধভাবে বিয়ে করে সংসার করার পর, যদি সে তালাক দেয় বা মারা যায় তাহলে ইদ্দত পালনের পরেই প্রথম স্বামী পুনরায় বিয়ে করতে পারবে।

তালাকের ইদ্দত হলো তিন হায়েজ যদি হায়েজ না আসে তাহলে তিন মাস আর গর্ভাবস্থায় হলে সন্তান জন্ম পর্যন্ত।

তথ্যসূত্র: সূরা বাকারা: আয়াত ২২৮, সূরা তালাক: আয়াত ৪, সহিহ বুখারী, হাদিস: ৫২৬১; সহিহ মুসলিম: ১৪০৭, ফাতাওয়া আলমগীরি ১/৩৭৩

লেখক: উসতায, জামি’আ ইসলামিয়া দারুল উলুম, ঘাটারচর, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।