
বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক পর্ষদ বৃহস্পতিবার গ্যাস সরবরাহ এবং বায়ুর মান উন্নত করতে দুই প্রকল্পে মোট ৬৪০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং বায়ুর মান বৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন অগ্রাধিকার। তিনি বলে, গ্যাস সরবরাহ সীমাবদ্ধতা এবং নগর বায়ু দূষণের মূল কারণগুলো মোকাবিলা করে, এই দুটি প্রকল্প বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা উন্নত এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।
দুটি প্রকল্পের একটি হলো ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের এনার্জি সেক্টর সিকিউরিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা কোম্পানিকে সহজে অর্থায়নের ব্যবস্থা করে দেওয়ার মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এই প্রকল্পটি। এর আওতায় আগামী সাত বছরের মাঝে এলএনজি আমদানিতে ২১০ কোটি ডলার পর্যন্ত ব্যক্তিমালিকানাধীন মূলধনের ব্যবস্থা করা হতে পারে একটি আইডিএ গ্যারান্টির মাধ্যমে।
আইডিএ হলো ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন। এর আওতায় বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ঋণগুলো বর্ধিত করার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে ব্যবহৃত এক-চতুর্থাংশ গ্যাসই এলএনজি। এর মাঝে ৪২ শতাংশ আবার ব্যবহার হয় শক্তি উৎপাদনে। অবধারিতভাবেই এলএনজির অপ্রতুলতায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বাধা পড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থনীতি। বিশ্বব্যাংকের এই নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে এলএনজির সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি নিশ্চিত করা যাবে, বলেন এই প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার এবং বিশ্ব ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ শক্তি বিশেষজ্ঞ ওলিয়াঙ্কা বিসিরিয়ু এডেবিরি।
অন্য প্রকল্পটি হলো ২৯০ মিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রজেক্ট। বাংলাদেশে বায়ু দূষণে অন্তত দেড় লাখ মৃত্যু হয়, ২৫০ লাখ দিন ধরে অসুস্থতা ঘটায়, এবং জিডিপির ৮.৩ শতাংশ খরচ হয় স্বাস্থ্য খাতে। বিশ্বের অন্যতম দূষিত একটি শহর ঢাকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া সীমার ১৮ গুণ খারাপ শহরটির বায়ুর মান।
বিশ্ব ব্যাংকের এই প্রকল্পে পরিবেশ অধিদপ্তরের নতুন এবং উন্নতমানের স্টেশন স্থাপন করা হবে এবং এদের মাধ্যমে বায়ুর মান নিয়ন্ত্রণ করা হবে আরো ভালোচাবে। এছাড়া বায়ু দূষণের উৎসগুলোর ওপরেও নজর রাখা হবে।
প্রকল্পটির আওতায় ৪০০টি বাসের ব্যবহার করা হবে যেগুলো কোনো দূষণ তৈরি করবে না। শুধু তাই নয়, শহরের অন্যান্য যানবাহন থেকে কী পরিমাণ দূষণ হচ্ছে তা পরিমাপের জন্যেও ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষা কেন্দ্র এবং পরীক্ষার জন্য বিশেষ কিট দেওয়া হবে। এতে প্রতি বছরে বায়ুতে ২,৭৩৪ মেট্রিক টন পরিমাণ পিএম২.৫ দূষন কমিয়ে আনা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।