
ফরিদপুর শহর থেকে পদ্মা নদীর অপর প্রান্তে ডিক্রিরচর ও নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ইঞ্জিনচালিত নৌকা। চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের কথা চিন্তা করে সাত বছর আগে ভাজনডাঙ্গা এলাকায় পদ্মা শাখা নদীর ওপর গার্ডার সেতু নির্মাণের উদ্যেগ নেয় স্থানীর সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৭৬ কোটি টাকা।
অর্ধযুগের বেশি সময় পার হলেও নির্মাণ হয়েছে মাত্র কয়েকটি পিলার। সেতুর কাজ বছরের পর বছর ঝুলে থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন পদ্মা তীরের দুটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ। বিশেষ করে ঝড়বৃষ্টির দিনে নদী পারাপারে কষ্টের শেষ নেই তাদের। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর এখন একটাই প্রশ্ন- কবে শেষ হবে বহুল কাক্সিক্ষত এই সেতুর কাজ।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি সেতুর কাজ শিগগিরই শেষ হবে। তার কোনো আলামত দেখতে পাচ্ছি না। এখনো আমাদের ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ট্রলারে করেই যাতায়াত করতে হয়। ডিক্রিরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা শেখ সোহরাব, আলিম, রহমত আলী বলেন, সেতু নির্মাণের খবর শুনে আমরা চরবাসী খুব খুশি হয়েছিলাম। বিগত কয়েক বছর ধরে কাজের কোনো অগ্রগতি দেখছি না। আদৌ এ সেতু দিয়ে আমরা যাতায়াত করতে পারব কি না জানি না।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের শেষ দিকে সেতু নির্মাণ শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল ‘রাফিয়া
কনস্ট্রাকশন’। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার দুই সহোদর বরকত-রুবেল ২ হাজার কোটি টাকা পাচার মামলায় ২০২০ সালের ৭ জুন গ্রেপ্তার হলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দুই বছর বন্ধ থাকে কাজ। ২০২২ সালের নভেম্বরে নতুন করে ‘জান্নাত কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’ এবং ‘দি নির্মিত’ নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয় কার্যাদেশ। নতুন ঠিকাদাররাও কাজের তেমন অগ্রগতি দেখাতে পারছেন না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জান্নাত কনস্ট্রাকশনের সাইড ম্যানেজার আবু হানিফ বলেন, ‘যে কাজ বাকি আছে তা শেষ করতে কমপক্ষে আরও দুই বছর লাগবে। এলজিইডির ফরিদপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী দেবাশীষ বাগচী বলেন, ‘বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সময়মতো কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।’