বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর কথিত নিপীড়ন রোধে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের 'ব্যর্থতার' নিন্দা জানিয়েছে টরন্টো-ভিত্তিক গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন (জিবিএইচসি) নামে একটি হিন্দু সংগঠন।শুক্রবার আগরতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে জিবিএইচসি-এর কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা জাতিসংঘ (ইউএন) এবং ভারত সরকারের কাছে পাঁচটি দাবি রেখেছেন। এই দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, মানবাধিকার রক্ষার জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা এবং বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য সুরক্ষিত অঞ্চল স্থাপন করা।
যদিও ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে আলোচিত হিন্দু নিপীড়নের ঘটনাগুলির একটিও উল্লেখ করতে দেখা যায়নি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটিকে। গণহত্যাকারী হাসিনার শাসনামলে এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততায় যেসব হিন্দু নিপীড়ন হয়েছে সেগুলো জায়েজ ছিল কিনা বা তারা এসব ঘটনারও বিচার চান কিনা সংবাদ সম্মেলনে এমন কোনো বিষয়ে দাবি করতে দেখা যায়নি জিবিএইচসিকে। ফলে সংগঠনটির গ্রহণযোগ্যতা, নিরপেক্ষতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।জিবিএইচসি’র নির্বাহী সুশান্ত দাস ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘অবৈধ’ এবং ‘বৈরি’ প্রশাসন হিসেবে আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে সহায়তা করতে ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেন।
তিনি ভিত্তিহীন দাবি করে আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত এবং এ ধরনের অসদাচরণ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করা উচিত।’বাংলাদেশে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বিতর্কিত ইসকন নেতা হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিষয়টি তুলে ধরে আরেক জিবিএইচসি নির্বাহী পুষ্পিতা সিনহা বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ‘ভারতের গুপ্তচর’ বলা হচ্ছে, এবং বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুলগুলিতে ভারতীয় পতাকাকে ‘অসম্মান’ করা হচ্ছে।বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলা গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পক্ষে সাফাই গেয়ে সিনহা আরও দাবি করেন, বাংলাদেশে বর্তমান প্রশাসন হিযবুত তাহরীরের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের সহায়তায় অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করছে।তিনি বলেন, “শিক্ষক, অধ্যাপক, মুক্তচিন্তাকারী এবং মুক্তিযোদ্ধারা (মুক্তিযোদ্ধা) হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের পক্ষে কথা বলার জন্য বাংলাদেশে চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছে।’’ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের তালিকা থেকে বেছে বেছে হিন্দু প্রার্থীদের নাম মুছে ফেলা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস