বুকে উঠে উপর্যপুরি ছুরাঘাতে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয় কলেজছাত্র মুরাদ হাসানকে (১৭)। গত বছরের ৩১ মে এই হত্যাকাণ্ডটি হয় ময়মনসিংহের নান্দাইলের চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে। এরপর থেকে হত্যায় অভিযুক্ত মূল হোতা ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আলম হামিমসহ অনেকেই পালিয়ে যায়। এ ঘটনার এক বছর সাত মাস পর কাতারে পাড়ি দেওয়ার জন্য বিমানে ওঠার আগেই হামিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।গতকাল শুক্রবার রাতে বিমানবন্দর থানা পুলিশের সহায়তায় নান্দাইল থানা পুলিশ এ অভিযান চালায়। পরে রাতে হামিমকে আনতে পুলিশের একটি দল ঢাকার শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে যায়।
স্থানীয় সুত্র ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, নান্দাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় লিফলেট বিতরণ করছিলেন কলেজছাত্র মুরাদসহ অনেকেই। এ সময় তাদের এই নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থীর সমর্থক স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা।তারা ওই সময় স্বতন্ত্রপ্রার্থীর পক্ষে প্রচারণাকারীদের মারধরসহ ধাওয়া দেয়। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগনেতারা দৌঁড়ায়ে স্থানীয় চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠের কিনারায় নিয়ে মুরাদসহ অনেককেই লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে।এতে অন্যরা সামান্য আহত হয়ে পালিয়ে রক্ষা পেলেও মুরাদ মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আলম হামিম মুরাদের বুকের উপর উঠে ছুরাঘাতে গুরুতর আহত করে তাকে। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তিনি মারা যান।এরপর থেকেই মুলহোতা হামিম পলাতক ছিলেন।
জানা যায়, অভিযুক্ত হামিম উপজেলার আলাবক্সপুর গ্রামের মো. আবুল কালামের ছেলে। তিনি স্থানীয় শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজ শাখার ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। অপর দিকে নিহত মুরাদ হচ্ছেন নান্দাইল পৌসভার কাকচর মহল্লার মো. তফাজ্জল হোসেনে ছেলে। মুরাদ হত্যার ঘটনায় মোট ১১ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা হয়।মামলাটি তদন্ত করছে নান্দাইল থানা।এ ব্যাপারে নান্দাইল থানার ওসি ফরিদ আহম্মেদ জানান, 'চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রাখছিল। এই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিক্তিতে জানা যায়, হত্যার মূল হোতা হামিমের বিদেশ যাওয়ার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যে কোনো সময় বিদেশ পাড়ি দিতে পারে। এ অবস্থায় গত শুক্রবার কাতার যাওয়ার পূর্ব মুহুর্তেই তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।