বিশ্বের সঙ্গে সিরিয়ার নতুন কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করতেই কি কাতারে আলোচনা করতে গেলেন সিরিয়ার শাসকেরা? রবিবার (৫ জানুয়ারি) সিরিয়ার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ সেইবানি কাতার সফরে গেছেন। ইতোমধ্যেই তার বৈঠক হয়েছে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। তিনি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বটে। কাতার জানিয়েছে, তারা চায় সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটুক। সিরিয়া আবারও একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হোক। এদিকে, সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আসাদ সরকারের আমলে আমেরিকা সিরিয়ার উপর যে নিষেধাজ্ঞাগুলো চাপিয়েছিল, তা যেন এবার তুল নেয়া হয়। কাতার যেন এ বিষয়ে মধ্যস্থতা করে।এছাড়াও কাতারের সঙ্গে সিরিয়া ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে চায় বলে জানিয়েছেন তিনি। পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য কাতারের সাহায্য প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সিরিয়ায় ক্ষমতা দখল দখল করেছে ইসলামিক বিদ্রোহী দল এইচটিএস। দীর্ঘ দিনের বাশার আল আসাদের সরকারের পতন হয়েছে। আসাদের সঙ্গে রাশিয়া এবং ইরানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ক্ষমতায় এসেই যেভাবে কাতারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরির কথা বলল সিরিয়ার বর্তমান শাসক, তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।রবিবারের বৈঠকের পর কাতারের তরফে জানানো হয়েছে, সিরিয়ার নতুন প্রশাসনকে তারা স্বাগত জানাচ্ছে। সিরিয়ার মন্ত্রীরা ইতোমধ্যেই তাদের উপর থেকে আমেরিকার একাধিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন। সিরিয়াও বিষয়টি স্বীকার করেছে। বলা হয়েছে, গৃহযুদ্ধের ফলে ৯০ শতাংশ সিরিয়ার মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছেন। তাদের কোনো আয় নেই। অনেকের বাড়ি যুদ্ধে ধসে গেছে।
সিরিয়ার অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারি কাজের ক্ষেত্রে সকলের বেতন ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, আসাদের আমলে বিশ্ব রাজনীতিতে সিরিয়ার যে কূটনৈতিক অবস্থান ছিল, এবার তা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে আমেরিকার দিকে যাবে। কাতারে গিয়ে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। তারা সরাসরি আমেরিকা এবং পশ্চিমা দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। এর ফলে তারা যে বিদেশি সাহায্য আরো অনেকটা বাড়াতে পারবে, সে কথাও প্রায় খোলাখুলি বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিডি-প্রতিদিন