কুষ্টিয়ার মধুপুর পশুহাট সংলগ্ন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ৯টার দিকে শ্বশুর টুটুল হোসেনকে (৪০) প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার জামাতা ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
নিহত টুটুল হোসেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা তুরাব হোসেনের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর সম্প্রতি দেশে ফিরে স্থানীয় বাজারে ব্যবসা করছিলেন। অভিযুক্ত জামাতা ইমরান হোসেন কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকার বাসিন্দা।
নিহতের ভাই সাব্বির হোসেন জানান, রাত ৯টার দিকে টুটুল মধুপুর গরুর হাটে চা পান করছিলেন। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মেয়ের জামাই ইমরান টুটুলের মুখে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় টুটুলকে সিএনজিতে করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে তার মরদেহ সিএনজি থেকে নামিয়ে রাস্তার পাশে রাখা হয়। সাব্বির আরও বলেন, ইমরান ও তার সাথে আরও তিনজন দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়। ইমরান নিজ হাতে তার শ্বশুরকে গুলি করে হত্যা করে। স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে হত্যাকারীরা একটি মোটরসাইকেল ও অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়।
নিহতের দুলাভাই হেলাল মুন্সি জানান, টুটুলের মেয়ের জামাই ইমরান ভালো প্রকৃতির ছিলেন না এবং টুটুলের মেয়েকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে তাদের পরিবারে সবসময় কলহ লেগে থাকত। টুটুল বিদেশ থেকে ফেরার কয়েক মাস আগে তার মেয়ে টুম্পা ইমরানকে তালাক দেয়। এরপর থেকেই ইমরান টুটুলকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন।
পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চার বছর আগে টুটুলের মেয়ে টুম্পার সঙ্গে ইমরানের বিয়ে হয়। পরবর্তীতে ইমরান দ্বিতীয় বিয়ে করেন, যা পারিবারিক কলহের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাদের চার বছর বয়সী আইয়ান নামের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। প্রায় তিন বছর ধরে টুম্পা তার ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন। আট মাস আগে টুটুল সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরলে টুম্পা ইমরানকে তালাক দেন। এরপর থেকেই ইমরান ক্ষিপ্ত হয়ে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছিলেন, যার পরিণতিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটল।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের পাশ থেকে একটি শটগান, কয়েক রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। নিহতের মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওসি জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
