
ঢাকা নগরীর বায়ুদূষণের সব উৎস প্রায় অনুপস্থিত। নগরীতে যান চলাচল করছে খুবই কম। কলকারখানা বন্ধ আজ কয়েক দিন। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে লোকজনও তেমন নেই নগরে। এরই মধ্যে আবার গতকাল শনিবার নগরজুড়ে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে গেছে। ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে প্রাকৃতিক এ উৎস ছাড়া আসলে কার্যকর কোনো দাওয়াই নেই। সরকারি কর্তৃপক্ষেরও ভরসা এই বৃষ্টি। তারপরও আজ রোববার ঈদুল আজহার পরদিন ঢাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর।
আজ সকাল সোয়া আটটার দিকে আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার গড় বায়ুমান ১৫০। বায়ুর এ মানকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয়। ১৬৭ স্কোর নিয়ে দূষণের শীর্ষে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। দ্বিতীয় স্থানে আছে চিলির সান্তিয়াগো।
বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে।
নগরীর অভিজাত এলাকা গুলশানের লেকপার্ক এলাকায় দূষণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। আইকিউএয়ারের মানসূচকে সেখানকার গড় বায়ুমান ১৬৩। বেশি দূষিত এলাকাগুলোর মধ্যে আরও আছে কল্যাণপুর, পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়ি, মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং এলাকা।
আজ আইকিউএয়ারের দেওয়া সতর্কবার্তায় ঢাকাবাসীর উদ্দেশে পরামর্শ, বাইরে বের হলে নগরবাসীকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। খোলা স্থানে ব্যায়াম করা যাবে না। ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।
গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে এক দিনও নির্মল বায়ু পায়নি রাজধানীবাসী। মার্চ ও এপ্রিল মাসেও বায়ুর মান ভালো ছিল না।
রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলোর মধ্যে আছে কলকারখানা ও যানবাহনের দূষিত ধোঁয়া, ইটভাটা, বর্জ্য পোড়ানো।

বায়ুদূষণ রোধে সাম্প্রতিক সময়ে হাঁকডাক বরং বেড়েছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দূষণ।
দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যত বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ। আবার গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও দূষণের মান ছিল ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মার্চ মাসেও দূষণ পরিস্থিতি ছিল মারাত্মক।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি। আজ ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৪ গুণ বেশি।