Image description
 

প্রতি বছর কোরবানির ঈদ এলেই মশলার বাজারে অস্থিরতা দেখা যায়। চাহিদা বৃদ্ধির সুযোগে প্রায়শই দাম বেড়ে যায় জিরা, এলাচ, দারুচিনিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মশলার। তবে, এবারের কোরবানির ঈদে চিত্রটি কিছুটা ভিন্ন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারির তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব মশলার দাম কমেছে, যা ঈদ বাজারের জন্য এক স্বস্তির খবর। একই সাথে, তেল ও চিনির দামও কমেছে, আর লবণের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।

মশলার বাজারে স্বস্তির নিঃশ্বাস

সাধারণত ঈদের আগে যে মশলার দাম আকাশচুম্বী হয়, এবার সেখানে দেখা যাচ্ছে নিম্নমুখী প্রবণতা। নভেম্বর ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ এর দামের প্রবণতা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে:

 
  • শুকনা মরিচ: আমদানি করা শুকনা মরিচের দাম জানুয়ারিতে ৩৫০ টাকা থাকলেও, জুনে তা কমে ৩১০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় শুকনা মরিচের দামও ২৬০ টাকা থেকে ২২০ টাকায় নেমে এসেছে।

  • কাঁচা মরিচ: হাইব্রিড কাঁচা মরিচের দাম জানুয়ারিতে ৪০ টাকা থাকলেও, জুনে ৫০ টাকায় কিছুটা বাড়লেও, স্থানীয় কাঁচা মরিচের দাম ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায় বেড়েছে। তবে, গত কয়েক মাসের তুলনায় এই বৃদ্ধি খুব বেশি নয়।

  • পেঁয়াজ: স্থানীয় পেঁয়াজের দাম জানুয়ারিতে ৫১ টাকা ছিল, যা জুনে ৫০ টাকায় নেমে এসেছে।

  • রসুন: আমদানি করা রসুনের দাম জানুয়ারির ২৩১ টাকা থেকে কমে ১৮০ টাকায়, এবং স্থানীয় রসুনের দাম ২১৪ টাকা থেকে ১১০ টাকায় নেমে এসেছে। এটি উল্লেখযোগ্য মূল্য হ্রাস।

  • আদা: ভারতের আদার দাম ১০২ টাকা থেকে কমে ১০০ টাকায়, এবং চীনের আদার দাম ১৯০ টাকা থেকে কমে ১৫০ টাকায় এসেছে।

  • হলুদ: হলুদের দাম জানুয়ারিতে ২৮০ টাকা থাকলেও, জুনে তা বেড়ে ৩০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এটি মশলার মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রমী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা।

  •  

     

     

মোটামুটিভাবে, হলুদ ছাড়া অন্য সব প্রধান মশলার দাম জানুয়ারির তুলনায় জুন মাসে স্থিতিশীল অথবা নিম্নমুখী রয়েছে, যা কোরবানিদাতাদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক।

তেল ও চিনির বাজারেও স্বস্তি

কোরবানির ঈদের ভোজের অবিচ্ছেদ্য অংশ তেল ও চিনি। এই দুটি পণ্যের দামও গত কয়েক মাসে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখিয়েছে:

  • সয়াবিন তেল (খোলা): জানুয়ারিতে প্রতি লিটার ১৭২ টাকা থাকলেও, জুনে তা কমে ১৫৫ টাকায় নেমে এসেছে।

  • সয়াবিন তেল (বোতলজাত): জানুয়ারিতে ১৭৫ টাকা থাকলেও, জুনে তা ১৮৮ টাকায় সামান্য বেড়েছে।

  • পাম তেল (খোলা): জানুয়ারিতে ১৬১ টাকা ছিল, যা কমে ১৪৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

  • চিনি (খোলা): জানুয়ারিতে প্রতি কেজি ১২৩ টাকা থাকলেও, জুনে তা কমে ১১০ টাকায় নেমে এসেছে।

  • চিনি (প্যাকেটজাত): জানুয়ারিতে ১২৫ টাকা থাকলেও, জুনেও তা ১২০ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে।

এই চিত্র থেকে বোঝা যাচ্ছে, ঈদ উপলক্ষে তেল ও চিনির বাজার বেশ স্বস্তিদায়ক অবস্থানে আছে।

লবণের দামে নেই কোনো পরিবর্তন

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে লবণ একটি অপরিহার্য উপাদান। জানুয়ারি থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত প্যাকেটজাত লবণের দাম ৪০ টাকা প্রতি কেজিতে অপরিবর্তিত রয়েছে।

সামগ্রিকভাবে, এবারের কোরবানির ঈদে অত্যাবশ্যকীয় মশলা, তেল ও চিনির দামের স্থিতিশীলতা বা নিম্নমুখী প্রবণতা ভোক্তাদের জন্য সুসংবাদ বয়ে এনেছে। এটি সাধারণ মানুষের উপর ঈদ ব্যয়ের চাপ কিছুটা হলেও কমাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।