
আগামী সপ্তাহে এক বিরল কূটনৈতিক সফরে লন্ডনে যাচ্ছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনুস। রাজা তৃতীয় চার্লস ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তাঁর বৈঠক এই সফরকে কেবল ব্যক্তিগত সম্মানের সীমা পেরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে—এটি হয়ে উঠতে চলেছে বাংলাদেশের জন্য এক নতুন কূটনৈতিক সম্ভাবনার দিগন্ত।
ড. ইউনুস ৯ জুন ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ১০ জুন রাতে লন্ডনে পৌঁছাবেন। সফরের তৃতীয় দিন রাজপরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক রাজকীয় অনুষ্ঠানে রাজা চার্লস তাঁর হাতে তুলে দেবেন ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’। এটি বাংলাদেশের জন্য এক ব্যতিক্রমী আন্তর্জাতিক সম্মান।
ড. ইউনুসের সঙ্গে রাজা চার্লসের ঐতিহাসিক সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হতে পারে মঙ্গলবার অথবা বুধবার। পাশাপাশি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও একাধিক বৈঠকের সময়সূচি চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
এই সফরে ড. ইউনুস আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা তৈরিতে সচেষ্ট হবেন। বিশেষত নির্বাচনপূর্ব সংস্কার, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে সরকারের অবস্থান ব্রিটিশ নেতৃত্বের সামনে তুলে ধরবেন। যুক্তরাজ্য দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের মানবাধিকার, সুশাসন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করে আসছে। এবারের আলোচনায় এই ইস্যুগুলোও গুরুত্ব পাবে।
সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক অর্থপাচার রোধ। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর লন্ডনে অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্রিটিশ এমপিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বিষয়টিও ইউনুসের আলোচনায় প্রাধান্য পাবে।
এছাড়া, ব্রিটিশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণে আলোচনা হবে। পোশাক, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অবকাঠামো, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও বিমান পরিবহন খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালানো হবে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হবে ড. ইউনুসের সফরে। যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে। এবার নিরাপদ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া জোরদারে তাদের কূটনৈতিক সমর্থন চাওয়া হবে।