
আগামী ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধান অনুযায়ী, ৮০ শতাংশের কম উপস্থিতি থাকলে সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ তো দূরের কথা, ফর্ম ফিলাপ করতে পারবে না কোনো শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি যাচাই ও মনিটরিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হবে আধুনিক ডিজিটাল বায়োমেট্রিক মেশিন।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধি, তদারকি ও যুগোপযোগী করতে এবং শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি বাড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলো প্রবেশপথে অথবা ক্লাসরুমের স্থাপন করা হবে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক উপস্থিতি মেশিন, যার মাধ্যমে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেকর্ড হবে। শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষকদেরও প্রতিষ্ঠান কিংবা ক্লাসে উপস্থিতি বায়োমেট্রিক মেশিনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরার পাশাপাশি শিক্ষকদেরও ক্লাস ফাকির প্রবণতা কমে যাবে বলে মনে করছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। সরকারি পলিটেকনিকগুলোতে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন সফলভাবে সম্পন্ন হলে পরবর্তীতে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অন্তর্ভুক্ত সকল প্রত্ষ্ঠিানে এ সিস্টেম চালু করা হবে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, বহু শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয় কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই ক্লাসে অনুপস্থিত থাকে। এতে পাঠদানে বিঘ্ন ঘটে এবং শিক্ষার মানেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিতি এবং কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধি নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির হিসাব সংরক্ষণ করা হবে এবং নির্ধারিত ৮০ শতাংশ উপস্থিতি পূরণ না হলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। পরীক্ষা তো দূরের কথা ফর্মফিলাপ করতে দেওয়া হবে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (কারিকুলাম) প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুল কবীর বলেন, ‘সরকারি সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার গুণগতমান নির্ধারণে ক্লাসে হাজিরা নিশ্চায়ন জরুরি। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যদি ক্লাসে না বসেন, তাহলে কোনভাবেই কারিগরি শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা যাবে না। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা। সেজন্য সকল সরকারি পলিটেকনিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবিধান অনুযায়ী ৮০ শতাংশের কম উপস্থিতি থাকলে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করতে পারবে না। ফর্ম পূরণ করতে গেলে অটোমেটিক উপস্থিতির হারের ওপর ‘যোগ্য’ ও ‘অযোগ্য’ মেসেজ শিক্ষার্থীদের কাছে যাবে। সামনের সেশন থেকেই এটি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।’