
নানামুখী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেই আগামী ২ জুন ঘোষণা হতে যাচ্ছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটের খসড়া চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর শর্ত পূরণে এবার বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে, যার প্রভাব পড়বে মধ্যবিত্তের জীবনযাত্রার ব্যয়ে। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও শিল্পখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে কিছু পণ্যের শুল্ক কমানোরও প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
এটি হবে দেশের ৫৫তম জাতীয় বাজেট এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট উপস্থাপন। যদি চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে এটি হবে অন্তর্বর্তী সরকারের একমাত্র বাজেটও।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, আগামী সোমবার (২ জুন) বিকেল ৪টায় অর্থ উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন আহমেদ বাজেট উপস্থাপন করবেন। রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন বিটিভির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলও একযোগে এই সম্প্রচার প্রচার করবে।
নতুন বাজেটে একদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও শিল্পখাত রক্ষায় কিছু পণ্যের শুল্ক কমানো হচ্ছে, আবার আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে বাড়ানো হচ্ছে অনেক পণ্যে শুল্ক।
চিনির ওপর প্রতি মেট্রিক টনে ৫০০ টাকা কম শুল্ক নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাটার, লবণ, কম ফ্যাটযুক্ত সয়াবিন তেল, বিদেশি জুস, জ্বালানি তেল, ইনসুলিন ও এর প্যাকেজিং উপকরণ, পশুখাদ্য, চুনা পাথর, দেশীয় কাগজ, কালি, নিউজপ্রিন্ট, ১৬-৪০ আসনের বাস, ১০-১৫ আসনের মাইক্রোবাস, ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল, ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট পেপার, আর্ট কার্ড, ক্রাফট লাইনার পেপার, পরিবেশবান্ধব ব্যাগ, ব্রেক প্যাড ও ক্রিকেট ব্যাটের ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব রয়েছে।
এছাড়াও পোড়া মাটির প্লেট, পচনশীল উপাদানে তৈরি গ্লাস ও বাটিসহ জাপানের জনপ্রিয় সামুদ্রিক খাবার যেমন স্কালোপ, হোস, পাইপ ইত্যাদির ওপর আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুল্ক কমানোর এই উদ্যোগ ভোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি দিলেও দেশীয় শিল্প খাত অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে পারে। অন্যদিকে বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা থাকলে শুল্ক কমানোর সুফল সরাসরি ভোক্তার হাতে পৌঁছাবে না বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।