পৌষের মাঝপথে শীতকালীন সবজির পসরা সেজে উঠেছে রাজধানীর বাজারগুলোতে। সরবরাহ বাড়ায় দামের ঢেউ খেলতে থাকা সবজির দামে স্বস্তি ফিরেছে। বাজার ব্যবধানে ৫ থেকে ১০ টাকার পার্থক্য থাকলেও অধিকাংশ সবজিই বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। তবে সরবরাহ সংকটের অজুহাতে বেড়েছে সরু চালের দাম।ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। দামি সবজির ও মসলা পেঁয়াজের দামেও এসেছে বড় পরিবর্তন। ফলে জোগান ভালো থাকায় দিন দিন সবজির দাম কমছে। তবে চালের বাজারে অস্বস্তি বেড়েই যাচ্ছে। বাজারের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণে বেচাকেনা কমতির দিকে।
সরেজমিন গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার, কারওয়ান বাজার ও শান্তিনগর বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।বর্তমানের বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২০ টাকা কমে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা করে, যা গেল সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা করে। আলুর মতো দাম কমে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা, ৩০ টাকা ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁপে ৩০, শালগম ৪০, মানভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকায়, গোল বেগুন ৫০, লম্বা বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। এ ছাড়া গত সপ্তাহের মতো করলা, পটোল, ঝিঙা ও ধুন্দল প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০, ৭০ টাকার চিচিঙ্গা ৬০ এবং কেজিতে ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
মোহাম্মদপুর টাউন হলের সবজি বিক্রিতে মো. জামাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, কারওয়ান বাজার থেকে সবজি এনে বিক্রি করায় কিছুটা দামের পার্থক্য থাকে। তবে গত সপ্তাহের থেকে সবজির দাম অনেক কমেছে। বাজারে আসা ক্রেতারাও বেশি সবজি কিনছে।এদিকে সবজির দাম কমতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ভোক্তাদের মধ্যে। কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা আতাউর নামে এক ক্রেতা দেশ রূপান্তরকে জানান, বাজার শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। এতে দাম কমছে। এমন দাম থাকলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য অনেক সুবিধা হয়।
বছর জুড়ে দামের ঢেউ খেলা মসলাজাত পেঁয়াজের দামে ভোক্তার স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে বাজার ব্যবধানে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ও ইন্ডিয়ান নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। এ ছাড়া দেশি রসুন ২৫০ ও ইন্ডিয়ান রসুন প্রতি কেজি ২২০ টাকা। চায়না আদা ২০০, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সবজির দাম কমলেও বাড়তে শুরু করেছে দেশের মানুষের খাদ্যের প্রধান উপকরণ চালের চালের দাম। আমনের ভরা মৌসুমেও বাজরে সরুচালের কেজি প্রতি ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ৬০ টাকার নিচে ভালোমানের কোনো চাউল পাওয়া যাচ্ছে না। গত ১০ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া বাজারে প্রতি কেজি নতুন আটাশ ৬০, পুরান আটাশ ৬৫, পাইজাম ৬০, কাটারিভোগ ৮৫ টাকা, বাসমতী ৯৪-৯৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শান্তিনগর বাজারের তানিয়া স্টারের স্বত্বাধিকারী তানভির রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমি বেশি দামে কিনে বেশিতেই বিক্রি করি। মিলারদের কারসাজিতে বাড়ছে চালের দাম। বাড়তি দামের প্রভাবে মানুষ চাল কম কিনছেন। ফলে কমেছে চালের বেচাকেনাও।এদিকে মুরগির বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানেও ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। বাজারে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ ও প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২১০ টাকায়, যা গেল সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২২০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি খাসির মূল্য ১১০০ থেকে ১১৫০, গরুর মাংস ৭৫০ এবং হাড়ছাড়া গরুর মাংস ৯৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৫ কেজি ওজনের রুই ৫০০ টাকা কেজি, ছোট রুই ২৫০, পাবদা আকারভেদে ৪০০ থেকে ৪৫০, চাষের শিং ৪৫০ থেকে ৭০০, পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০, কৈ আকারভেদে প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২৫০, এক কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার ২০০ ও জাটকা ইলিশ ৫০০ টাকা কেজি।