বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, এখনও অনেকে আমাদের অভ্যুত্থানকে মেনে নিতে পারেনি। সেজন্য পুলিশ, বিচার বিভাগ ও সচিবালয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। সচিবালয়ে আমাদের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছেন তাদের বলতে চাই, আপনাদের আম্মু আর দেশে ফিরে আসবে না, আপনারা ‘রিয়েলিটি মাইনে নেন’। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশে আওয়ামী লীগের দোসর ফ্যাসিস্ট সচিব ও সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহর "আপনারা ‘রিয়েলিটি মাইনে নেন’" বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি লিখেন, “সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!”
জবাবে সেলুকাস- ‘আপনি রিয়্যালিটি মাইন্যা ন্যান, স্যার!’
সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন পোস্ট করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা। পোস্টের কমেন্ট বক্সে সাদিয়া আফরিন নামে একজন লিখেন, স্যার এখনও রিয়েলিটি নিয়ে কনফিউশনে।
মহিউদ্দীন খান মাহি লিখেন, আপনি কই ভাই? সরকারি চাকরি করে মানুষ আপনার মতো পালাতে পারে তা আপনাকে না দেখে বুঝতে পারতাম না... কোথাও একটা ভেজাল আছে...
আশিক রহমান লিখেছেন, রিয়েলিটি নিজেরা অর্জন করলে সে রিয়েলিটিতো মানতেই হবে। সরকারের বিরুদ্ধে এতবড় ষঢ়যন্ত্র হলো কিন্তু পুলিশ তা জানলো না। এখন সেলুকাসের প্রশ্ন করে আর কি হবে।
মোহাম্মদ আটিক হাসান নাম এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, মুরব্বী রিয়েলিটি মেনে নিচ্ছে না এখনো। মুরব্বীর বারোটা বেজে গেছে অলরেডি।
উল্লেখ্য, বিসিএস ১৫ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে পুলিশে সবচেয়ে প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের একজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত ১৩ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। আগের দিন মনিরুলকে এসবিপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে ব্যয় করার জন্য ৩ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা এনে নিজের কক্ষে রেখেছিলেন এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম। কিন্তু সেই টাকা বিতরণ করার আগেই ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ওই দিন থেকে আর অফিসে যাননি মনিরুল। কিন্তু তাঁর কক্ষে ২৫ কোটি টাকা থাকার তথ্যটি এসবির কয়েকজন কর্মকর্তা জানতেন। তাঁরা এসবি কার্যালয়ের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ও ইন্টারনেট বন্ধ রেখে ৬ থেকে ১২ আগস্টের মধ্যে কোনো এক সময়ে মনিরুলের কক্ষ থেকে ওই টাকা সরিয়ে নেন। এর সঙ্গে পুলিশের তৎকালীন একজন উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও একজন অতিরিক্ত ডিআইজি জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর বের হওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করে। উৎস: ইত্তেফাক।