
প্রায় তিন সপ্তাহ আগে বেড়েছিল ডিমের দাম। সেই দাম এখনো কমেনি। গতকাল বৃহস্পতিবারও রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি রঙের ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়।
বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহের শুরুতে ডিমের দাম আরও কিছুটা বেশি ছিল। তিন দিন আগে দাম ডজনে পাঁচ টাকা কমে বর্তমান দরে এসেছে। তবে এটিও বেশ চড়া দাম বলা যায়। কারণ, এক মাস আগের তুলনায় এখন ডজনে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে বৃষ্টির কারণে গতকাল বাজারে ক্রেতা উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল।
ডিমের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে বাজারে সবজির দাম শীত মৌসুমের তুলনায় কিছুটা বেশি। এ কারণে ডিমের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। সে তুলনায় ডিমের উৎপাদন বাড়েনি। এ কারণে ডিমের দাম কিছুটা বাড়তি রয়েছে।
এদিকে ডিমের দাম বেশি থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা দাম কমেছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির। বৃহস্পতিবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২৩০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে।
বিভিন্ন ধরনের সবজি মোটামুটি স্থিতিশীল দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। শুধু বাড়তি রয়েছে টমেটো ও পেঁপের দাম। গতকাল প্রতি কেজি পটোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকায়; বরবটি, কাঁকরোল, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এ ছাড়া টমেটো ৭০–৮০ টাকা ও পেঁপে ৫০–৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সজনে ছাড়া মোটামুটি সব সবজির দামই এক শ টাকার নিচে রয়েছে।
তবে নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি ছিল ঢাকায়। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আগামী এক–দুই দিনও এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে কিছু পণ্যের সরবরাহে সাময়িক ঘাটতি ও দাম বাড়তে পারে বলে জানান বিক্রেতারা।
বাজারে মাছ ও মাংস অনেকটা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি পাবদা মাছ ৪০০–৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, পাঙাশ ১৮০–২০০ টাকা, রুই ৩০০–৩৫০ টাকা, কই ২৫০–২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০-৮০০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
চালের দাম স্থিতিশীল
এদিকে বাজারে সরু বা মিনিকেট চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মূলত বোরো ধান থেকে তৈরি নতুন চাল বাজারে আসায় চালের দাম কমেছে। খুচরা পর্যায়ে বেশির ভাগ মিনিকেট চালের কেজি এখন ৭৫ টাকার আশপাশে। এই দাম আগের সপ্তাহের মতোই।
গতকাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকানে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর প্রভৃতি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল ৭৫ টাকা ও রসিদ মিনিকেট চাল ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম রাখা হচ্ছে ৮২ টাকা। মাসখানেক আগেও পুরানো মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৮৫ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছিল। এ ছাড়া নাজিরশাইল চাল মানভেদে ৮০ থেকে ৯৫ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৫৮ টাকা ও স্বর্ণা ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, আলু ২০–২৫ টাকা, দেশি রসুন ১২০–১৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।