Image description

দেশের শেয়ারবাজার ‘ডাকাতদের আড্ডা’ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, এক ডাকাত চলে গেলে আরেকটা ডাকাত আসছে। এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টাও এর সংস্কারে জোর দিয়েছেন।

আজ রোববার রাজধানীর পল্টনে পুঁজিবাজার প্রতিবেদকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত এক সংলাপে এসব কথা বলেন শফিকুল আলম।

‘সিএমজেএফ টক উইথ শফিকুল আলম’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।

অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের সংস্কার যাঁরা করেছেন, তাঁরা সবাই গোষ্ঠীস্বার্থের দিকে তাকিয়েছিলেন। ফলে দেখা যাচ্ছে, এখানে যাঁরা বড় বড় খেলোয়াড় আছেন, তাঁরা সব সময় সুবিধা পেয়েছেন বা নিয়েছেন। এর বিপরীতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনে বেশির ভাগ সময় কারসাজির শিকার হয়েছেন ও প্রতারিত হয়েছেন।’

কিছু কিছু গোষ্ঠী অত্যন্ত সংঘটিতভাবে শেয়ারবাজারে কারসাজি করেছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, কিন্তু কোনো সরকারই তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়নি। দেখা যাচ্ছে স্থানীয় যারা সংস্কার করতে চায়, তারা আরকটা ধান্দাবাজ গোষ্ঠী। সুতরাং এখন যে সংস্কার করা হবে, যাঁরা এই সংস্কার করবেন, তাঁরা হবেন ওইসব গোষ্ঠীস্বার্থের অনেক দূরের লোক। তাঁরা নির্মহভাবে সংস্কার করবেন।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে শেয়ারবাজার সংস্কারে গুরুত্ব দিয়েছেন। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা সম্ভব হবে। এর জন্য তিন মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এসে শেয়ারবাজারে কী কী করণীয় তা বলবেন এবং সে অনুযায়ী খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফলে আমরা আশা করছি, শেয়ারবাজার কোনো গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে থাকবে না।’

শেয়ারবাজারকে অনেকে অবৈধভাবে অর্থ আয়ের জায়গা বানিয়েছেন উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, বছরের পর বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, আমাদের আশপাশে যাঁরাই শেয়ারবাজার একটু প্রভাবশালী ছিলেন, কিংবা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশপাশে ছিলেন, তাঁরা সবাই কোটিপতি হয়ে গেছেন। সেই পরিস্থিতি যেন আবার তৈরি না হয়, সাধারণ শেয়ারধারীদের স্বার্থ যেন সুরক্ষিত হয়, সে জন্য প্রধান উপদেষ্টা বারবার তাগাদা দিয়েছেন।’

সংস্কারের জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ কেন আনা হবে—সে বিষয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘শেয়ার মার্কেট তো রকেট সায়েন্স না যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিদেশি একজন এসে বুঝবেন না। পুরো বিশ্বেই শেয়ারবাজারের প্রমিত প্রক্রিয়া বা রীতিনীতি আছে। আমাদের ভয় হয়, স্থানীয় কাউকে সংস্কারের জন্য আনা হলো, কিন্তু তিনি কোনো গোষ্ঠীর কাছে বিক্রি হয়ে যান কি না। আমরা তো এটা তদারক করতে পারব না। সে জন্য আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের ওপর জোর দিচ্ছি। এ ধরনের সংস্কার শ্রীলঙ্কা ও ভারতে হয়েছে। তারা পারলে আমরা কেন পারব না।’