Image description

Ali Ahmad Mabrur ( আলী আহমদ মাবরুর )

প্রথমত, বিপরীত লিঙ্গের সাথে মেলামেশা করার ক্ষেত্রে আমাদের সবারই অনেক বেশি সতর্ক হওয়া দরকার। কমবেশি সব মানুষই ধরে নেয় যে, নিজের ওপর আমার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আছে এবং অন্য কারো ওপর আমার যদি কোনো ফিলিং তৈরিও হয়ে যায় তারপরও আমি নিজেকে সংযত রাখতে পারবো। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কারো প্রতি যখন অনুভূতি তৈরি হয় তখন সে অনুভূতির শক্তি যে কতটা তীব্র হতে পারে, এই অনুভূতি মানুষকে কতটা বেপরওয়া বানিয়ে ফেলতে পারে- এ সম্পর্কে তাদের বিশেষ করে তরুণ তরুনীদের তেমন ধারনাই নেই।
 
বয়সে যারা একটু প্রবীন তারা বিষয়টি কিছুটা বুঝতে পারবেন কেননা তারা এ বয়সটি পার হয়ে এসেছেন। তবে প্রবীন ব্যক্তিরাও সবসময় নিজেদের আবেগ বা অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন- বিষয়টি কিন্তু তেমনও নয়। তারাও ভুল করেন। আল্লাহ তাআলা মানুষের এই দুর্বলতাগুলো জানেন। এ কারণে আল কুরআনে রাব্বুল আলামীন বিপরীত লিঙ্গের প্রতি এই অনুভূতিকে সাকরা বা টক্সিকেটিং বলেছেন। এর কারণ হলো, কারো ভেতর এই অনুভূতিগুলো যখন তৈরি হয় তখন তার বোধ-বুদ্ধি কাজ করে না।
 
তাই হালাল ডেটিং নাম দিয়ে অবৈধ জিনিসকে বৈধতা দেয়ার সুযোগ নেই। অবিবাহিত তরুণ তরুনীর কখনোই পিতামাতা বা পরিবারের কারো অনুপস্থিতিতে পরস্পরের সাথে দেখা করার সুযোগ নেই। এখানে পরিস্কার করে বলা দরকার যে, বিয়ে করার জন্য দুজন তরুণ তরুনী একে অপরকে দেখতেই পারে। কিন্তু সমস্যা হয় তখন যখন কেউ হালাল ডেটিং নাম দিয়ে বারবার দেখা করে। কিংবা ৮-১০ জন মেয়ের সাথে দেখা করে এবং বলে যে, আমি এর মধ্যে থেকে একজনকে বিয়ে করবো। আপনার যদি কাউকে দেখে ভালো লাগে তাহলে নিজেই সব দায়িত্ব না নিয়ে বরং অভিভাবককে জানান। প্রয়োজনে একাধিকবারও ঐ মেয়ের সাথে দেখা করতে পারেন। তারপর ইস্তিখারা করে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
 
অভিভাবকের সম্মতি নিয়ে পাবলিক প্লেসেও পরস্পর দেখা করা যায় তবে এটিও বেশ ঝুঁকিপূর্ন। মনে রাখা দরকার, ইসলাম পরস্পরকে দেখার সুযোগ দিয়েছে কেবলই বিয়ে করার জন্য, টাইম পাস বা হুক আপ করার জন্য নয়। এগুলো পশ্চিমা থেকে আমদানি করা সংস্কৃতি। তাছাড়া একজন মেয়ে বা ছেলে আপনার জন্য লাইফ পার্টনার হিসেবে সঠিক কিনা এটি যাচাই করার অজুহাতে তার সাথে তিন-চার বছর ধরে সম্পর্ক রাখা বা নিয়মিত দেখা করার কোনো সুযোগও ইসলাম দেয়নি।
 
একবার বা দুবারের সাক্ষাতেই জীবন দর্শন বা আপনার ভাবনাগুলো শেয়ার করে যাচাই করে নেয়া যায় যে, আদৌ তার সাথে আপনার মিলছে কিনা। বাকিটা পরিবারের ওপর ছেড়ে দিন। তাদের সাথে আলাপ করুন। আর ইস্তিখারা করে আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করুন। সবসময় সংস্কৃতির দোহাই দেয়া যাবে না। প্রচলিত সংস্কৃতি আর ধর্মীয় বিধানের মধ্যে পার্থক্য করতে শেখা দরকার।
 
বিব্রতবোধ করলেও পরিবারের সিনিয়র সদস্যরা যদি তরুণ সদস্যদের সাথে এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন, তাহলে অনাকাংখিত অনেক সমস্যাই নিরসন করা সম্ভব। জীবন সঙ্গী বাছাই করার এই গুরুত্বপূর্ন প্রক্রিয়া থেকে অভিভাবকদের বাদ দিতে চাওয়া সন্তানদের উচিত নয়। আবার সন্তানেরা কিছু একটা চাইলেই বা পছন্দ করলেই তাতে আপত্তিই জানাতে হবে- অভিভাবকদেরও এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।
(ইয়াসির ক্বাদির আলোচনা থেকে)