Image description

৫ আগস্টে যে আকাঙ্ক্ষার জন্ম হয়েছিল গালিগালাজ ও গণঅবিশ্বাসের কারণে তার ধীর ও করুণ মৃত্যু হবে বলে মন্তব্য করেছেন লেখক ফাহাম আবদুস সালাম। 

মঙ্গলবার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে ফাহাম লিখেছেন- ‘যে আকাঙ্ক্ষার জন্ম হয়েছিল ৫ আগস্টে- এসব গালাগাল, গণঅবিশ্বাস ও সফল ইতরফেস্টের মধ্যে দিয়ে তার ধীর ও করুণ মৃত্যু হবে। ১৯৭১ এ যেমন পলিটিক্যাল ফ্রিডমকে আমরা নতিজা দিতে পারি নাই এবারও সম্ভবত ফেইলই করবো। আল্লাহ না করুক- কিন্তু তাই হবে বলে মনে হচ্ছে।’

ফাহাম আবদুস সালাম লিখেন, ‘বছরের শেষে এসে ভাবছিলাম এই যে ট্যাগের রাজনীতি- এটা তো আসলে আমাদের সাইডের লোকেরাই সব করছে। সবাই সবাইকে হেনস্তা করে মজা নিচ্ছে। মানে এই মুহূর্তে ফেসবুকের উত্তাপ ১৫ জুলাই থেকে আমার মনে হয় মিনিমাম ১০০ ডিগ্রি উপরে আছে। কেন? আমরা এই লেভেলে কেন নামলাম? আসলে ৫ আগস্টের পর এন্টি-ফ্যাসিস্টদের মধ্যে একটা অভূতপূর্ব সেল্ফ-এনটাইটেলমেন্টের সঞ্চার হয়েছে। আমরা সবাই দেশ স্বাধীন হওয়ার কারণে দেশ থেকে কিছু আশা করছি। আমাদের অধিকার হয়েছে। যেহেতু আমরা পার্টিসিপেট করেছি—সেহেতু আমাদের এখন কিছু পাইতে হবে। এখানে ফি-সাবিলিল্লাহ বলে কিছু নাই।’  

তার মতে, ‘এই এনটাইটেলমেন্ট নিজেই এক আশ্চর্য বিষয়। ধরেন যে একজন ফেসবুকার/ইউটিউবার দুর্দান্ত অ্যাক্টিভিজম করেছেন। পুরো জাতি তার কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু তিনি জীবনে ৫ জন লোককে ম্যানেজ করেন নাই। এমন লোক আশা করছেন যে, তিনি উপদেষ্টা হবেন। বাড়িয়ে বলি নাই। তো এই মানুষটা ম্যান ম্যানেজমেন্টে গেলে তো ফেইলই করার কথা- নাকি? কিন্তু যদি সত্যি কথাটা আপনি বলেন- তাহলে আপনি আওয়ামী। আমি এমন লোকের কথা জানি যিনি ২৫ বছর আগে রিটায়ার করেছেন কিন্তু ৫ তারিখের পর পাগলা হয়ে ওঠেন- উপদেষ্টা কিংবা শীর্ষ কোনো পদ পাওয়ার  জন্য। 

এখন যারা আমাদের মতো, মানে শিক্ষিত ও টাই পরে যারা তাদেরকে কিন্তু ফিট করা গেছে কমবেশি। কিন্তু যে ধরেন থানাতে আগুন দিয়েছিল কিংবা রাস্তায় ব্যারিকেড ভাঙলো কিংবা পুলিশকে দৌড়ানি দিয়েছিল সে কী করবে? সে তো উপদেষ্টার ব্লেসিং পাবে না। আমার ক্লাসের লোক থেকে তার সেল্ফ-এনটাইটেলমেন্ট তো খুব একটা কম হওয়ার কথা না। উচিতও না। তাকে তো কেউ ডিজি বানাবে না। উপদেষ্টার অ্যাডভাইজার বানাবে না। ভিসি বানাবে না। সে কী করবে? সে চাঁদাবাজি করছে। নিজের ব্যবস্থা সে নিজেই লোকালি করে ফেলেছে। এটাই বাস্তবতা। আমাদের অসুখ সবারই সেইম। ম্যানিফেস্টেশান আলাদা। আমরা সবাই আন্দোলনে পার্টিসিপেট করার কারণে কিংবা আওয়ামী লীগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য কিছু পেতে চাই।’

বিষয়টির ব্যাখ্যা করে ফাহাম বলেন, ‘যে মন মতো পাচ্ছে না- সে অন্তত হেনস্তা করতে চাইছে। বিষয়টা ইন্টারেস্টিং। এক সাইবার রাহবারকে দেখলাম সে আমার লেখা শেয়ার করে আমাকে ও মির্জা আলমগীরকে হেনস্তা করার আহবান জানাচ্ছে। এই মহান রাহবার গত ১৫ বছর দেশের বাইরেই ছিলেন। তখন কোনোদিন দেখি নাই টু শব্দ করতে। জাফর ইকবালের মতো গর্তে লুকিয়ে ছিলেন। এখন গর্ত থেকে বেরিয়ে বিশাল লম্বা কথা বলছেন। তাদেরকে হেনস্তা করতে বলছেন যারা আসলে তাদের দলের বিরুদ্ধে করা অত্যাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন, যখন তারা গর্তে লুকিয়ে ছিল। ব্যাপারটা আমার কাছে মোহময় মনে হয়। জাদুবাস্তবতা মনে হয়। যেই লোক ২০১৮ সালে নির্বাচনের রাতে আওয়ামী লীগকে একরকম ডিফেন্ড করেছিল, সে এখন বলছে যে, আওয়ামী লীগ ১৯৭২ থেকে ফ্যাসিস্ট।’