
সেন্ট মার্টিন নিয়ে মন্তব্য করায় বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে একসময় সমালোচনা করেছিলেন শফিকুল আলম। উপস্থাপক রোকসানা আনজুমান নিকোল সরাসরি জানতে চান—সেন্ট মার্টিন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে তিনি এখনো চটে যান কি না, আর আদৌ সেখানে কী হচ্ছে। সূত্র: যমুনাটিভি
জবাবে শফিকুল আলম বলেন, “আমি ওনার (রুমিন ফারহানা) ওপর চটে যাইনি। তবে আমি মনে করি, তিনি একজন দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদ। যখন আপনি দায়িত্বশীল পলিটিশিয়ান হবেন, তখন এমন বিষয় নিয়ে কথা বলার আগে ভালোভাবে জানতে হবে। আমার মনে হয়েছে, উনি হয়তো বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করেননি।”
তিনি আরও বলেন, “ফরেন মিনিস্ট্রি, চিফ অ্যাডভাইজারের অফিস, এনভায়রনমেন্ট মিনিস্ট্রি থেকে বহুবার বলা হয়েছে কী হচ্ছে সেন্ট মার্টিনে। তারপরও যদি তার সন্দেহ থাকে, তিনি সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পারেন। কিন্তু না জেনে বারবার ‘চিপ, লো কোয়ালিটি কনস্পিরেসি থিওরি’ বলা ঠিক নয়। আপনি যখন বড় রাজনৈতিক দলকে প্রতিনিধিত্ব করেন, তখন জনগণের সামনে সত্য তুলে ধরার দায়িত্ব আপনার।”
তবে উপস্থাপক নিকোল তাকে থামিয়ে বলেন, “ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এখানে উপস্থিত নেই। আপনি একতরফাভাবে কথা বললেন। তিনি পরে বলেছিলেন—বাড়ির পাশে বুড়িগঙ্গা নদী যেখানে সরকারের কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়, সেখানে এত দূরের সেন্ট মার্টিন নিয়ে সরকারের বাড়তি আগ্রহ কেন?”
জবাবে শফিকুল আলম বলেন, “আমরা সেন্ট মার্টিনে কিছু করিনি, শুধু পরিবেশ রক্ষায় কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। এটা একটি রেয়ার কোরাল দ্বীপ। পরিবেশবাদী ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে আমরা নির্দিষ্ট সময়ের পরে সেখানে পর্যটক প্রবেশ সীমিত করেছি। এতে সেন্ট মার্টিনে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য ফিরেছে, যা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।”
নিকোল পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, “আপনি যেমন বললেন, সেন্ট মার্টিন একটি দুর্লভ প্রবাল দ্বীপ, তেমনই বুড়িগঙ্গা হলো ঢাকা শহরের প্রাণ। গত কয়েক দশকে তার পানির রং পাল্টায়নি। কেন সেখানে সরকারের মাথাব্যথা নেই?”
জবাবে শফিকুল বলেন, “বুড়িগঙ্গার সঙ্গে অন্তত ৩০০–৪০০টি কারখানা জড়িত, সাথে ঢাকার পুরো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। বুড়িগঙ্গাকে পরিষ্কার করতে হলে গোটা ব্যবস্থাপনাকে পাল্টাতে হবে। এতে বিলিয়ন ডলারের খরচ হবে, যা সরকারের হাতে নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আপনি যদি নীতিনির্ধারক হন, তাহলে ডুয়েবল কাজটা আগে করবেন। পর্যটন ব্যবসায়ীকে রুটি-রুজির সুযোগ দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব, তাই সেটা করছি। আমরা বুড়িগঙ্গা পরিষ্কারের মাস্টারপ্ল্যান নিচ্ছি, কিন্তু সেটা রাতারাতি সম্ভব নয়।”
উপস্থাপক নিকোল বলেন, “তাহলে কি সরকার বুড়িগঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা শিল্প মালিকদের জন্য যতটা সহানুভূতিশীল, সেন্ট মার্টিনের পর্যটন ব্যবসায়ীদের জন্য আরও বেশি আন্তরিক?”
জবাবে শফিকুল আলম বলেন, “হ্যাঁ, যা করা সম্ভব, সেটাই আমরা আগে করছি। কিন্তু বুড়িগঙ্গা পরিষ্কার করাও আমাদের অগ্রাধিকার, তার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”