Image description

উন্নয়নের নামে বিভিন্ন নদীর ওপর বড় সেতু তৈরির বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতু দিয়ে পদ্মা নদীর ক্ষতি করছেন না? যমুনার তো ইতোমধ্যে ক্ষতি হয়ে গেছে। এখন শুনছি বরিশাল থেকে ভোলা আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর সেতু হবে। এভাবে যে নদীর ক্ষতি করা হচ্ছে গুলো অধর্ম।

মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘৬ষ্ঠ আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বিতর্ক উৎসব ২০২৫' এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। সমাপনী অনুষ্ঠানের বিষয় ছিল- ‘সভ্যতার বিবর্তনে নদী ও ধর্ম'।

 ফরিদা আখতার বলেন, নদী মরে যায়, শুকিয়ে যায়, হারিয়ে যায়; এরকম যে হচ্ছে এটা অধর্মের অংশ। বুড়িগঙ্গা দিয়ে আপনি যদি লঞ্চে করে ভোলা বা বরিশাল যান, ঢাকা পার হওয়ার বেশ অনেকটা পথ এত গন্ধ যে লঞ্চে বসেও থাকা যায় না। ওপাশে তো মানুষ থাকে।

তিনি বলেন, নদী দূষিত হচ্ছে এবং ওখানে সব প্রাণী মারা যাচ্ছে। নদীকে রক্ষার জন্য বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে এটার দায়িত্ব নিতে হবে। নদী রক্ষা করা এবং নদীর সঙ্গে যুক্ত প্রাণকে রক্ষা করা, এগুলোর কাজ হবে। কারণ নদী শুধু সৌন্দর্য নয়, এটার সঙ্গে বহু প্রাণীর জীবন জড়িয়ে আছে।  

প্রধান বক্তার বক্তব্যে নদী গবেষক শেখ রোকন বলেন, সব ধর্মেই নদীর গুরুত্ব আছে। হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম খ্রিস্টান সব ধর্মেই নদী পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ। আন্তঃধর্মীয় একটি কমন জায়গা হলো নদী।  

তিনি বলেন, আমাদের সভ্যতা নদী বহন করে আছে। তিব্বত আর বাংলার সভ্যতার সংযোগ করেছে ব্রহ্মপুত্র, উত্তর ভারত আর বাংলার সংযোগ স্থাপন করেছে গঙ্গা। নদী যুগ যুগ ধরে সভ্যতা, সংস্কৃতি বহন করে নিয়ে আসছে।  

তিনি  আরও বলেন, এ অঞ্চলে ধর্ম সম্প্রসারিত হয়েছে নদী পথে। হযরত শাহজালাল সিলেট গিয়েছেন নদীপথে, শাহ মখদুম সিরাজগঞ্জ এসেছেন নদীপথে। সুলতান মাহিসাওয়ার পুণ্ড্র নগরীতে বর্তমান বগুড়া এসেছেন নদীপথে। কাজেই প্রত্যেক ধর্মেই নদীকে রক্ষার কথা বলা হয়েছে।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন্স ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি আসমা সুলতানা লিজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আবু সায়েম, আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপ কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহিদুল হাসান আলোচনায় অংশ নেন। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নূরুদ্দীন মুহাম্মাদ অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।

বিতর্ক উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২টি বিতর্ক দল অংশ নেয়। এতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেনারি সায়েন্স অনুষদের বিতর্ক দল চ্যাম্পিয়ন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের বিতর্ক দল রানার্সআপ হয়।