
যুদ্ধক্ষেত্রে চীনা প্রযুক্তির কাছে ইউরোপীয় প্রযুক্তির ‘হেরে যাওয়াকে’ ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ‘সবচেয়ে বড় কারণ’ বলে মনে করেন কলামনিস্ট ও চিন্তক ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেন, ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমান যারা তৈরি করে, তাদের শেয়ারদর এরই মধ্যে পড়ে গেছে; অন্যদিকে চীনা কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচনা অনুষ্ঠান ইনসাইড আউটে তিনি এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউবে অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করা হয়।
ফরহাদ মজহার বলেন, “আজ পাকিস্তান-ভারতের যে যুদ্ধ আমরা দেখতে পাচ্ছি, সেটা অত্যন্ত দ্রুত বেগে শেষ হয়েছে। শেষ হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে।
“সবচেয়ে বড় কারণ হল, যুদ্ধে এই প্রথম ফরাসি প্রযুক্তি, ইউরোপীয় প্রযুক্তি, যেমন রাফাল (যুদ্ধবিমান), এর চেয়ে যে চীনের প্রযুক্তি সুপারিয়র, সেটা প্রমাণিত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আপনারা সাংবাদিকরা খেয়াল করেছেন কি না জানি না; আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এটা অবশ্য বাইরে থেকে বুঝতে পারবেন না। ফলে ট্রাম্পকে যুদ্ধ থামিয়ে দিতে হয়েছে; এটাই হচ্ছে ইস্যু।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ইনসাইড আউট অনুষ্ঠানে কলামনিস্ট ও চিন্তক ফরহাদ মজহার।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন উত্তেজনার সূত্রপাত গত ২২ এপ্রিল। সেদিন কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়।
এ ঘটনার শোধ নিতে বুধবার প্রথম প্রহরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। জবাবে পাকিস্তানও ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গোলা বর্ষণ শুরু করে।
এভাবে চার দিন পাল্টাপাল্টি হামলা চলার পর শনিবার বিকালে যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ, যেখানে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করে যুক্তরাষ্ট্র।
এই যুদ্ধবিরতির ‘দ্বিতীয়’ কারণ হিসেবে ফরহাদ মজহার বলছেন, “কাশ্মীরের পেহেলগামের যে হত্যাকাণ্ড, তাতে পাকিস্তান আদৌ জড়িত কি না, সেটা ভারত প্রমাণ করতে পারেনি।
“পাকিস্তান যখন বলেছে, আন্তর্জাতিক স্বাধীন তদন্ত হোক, তখন ভারত সেখান থেকে সরে এসেছে, ঠিক আছে? ফলে ভারতের মধ্যে আজ হোক কাল হোক, জনমত গড়ে উঠছে বিজেপির বিরুদ্ধে।”
ফরহাদ মজহারের ভাষায়, “ভারতের সমস্যা হল হিন্দুত্ববাদী জনমত। ভারতের জনগণের মধ্যে হিন্দুত্ববাদী প্রবণতা আছে। কিন্তু এ হিন্দুত্ববাদ এবারই প্রথম পাকিস্তানের হাতে অপমানিত হল, একটা মার খেল।
“মারটা এমন যে, আন্তর্জাতিক যে যুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রি, তাদের যে প্রতিযোগিতা, এই প্রতিযোগিতার মধ্যে এটা ঢুকে পড়েছে। কারণ ইতোমধ্যে ফরাসি রাফাল বিমান যারা তৈরি করে, তাদের কোম্পানির শেয়ারদর পড়ছে; আর চীনা কোম্পানির শেয়ারদর উঠছে। এটা দেখুন, ইকোনমিটা একটু খেয়াল করুন।”