
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিট্যাবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের ভূয়া মামলার কাজপত্র প্রস্তুত কারক এবং তিনটি খুনের মামলার আসামি সৈয়দ জগলুল পাশাকে গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বৈষম্য বিরোধী কর্মচারি ঐক্য ফোরাম। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
সাবেক সচিব ও বৈষম্য বিরোধী কর্মচারি ঐক্য ফোরামের সভাপতি এ বি এম আব্দুস সাত্তার স্বাক্ষরিত ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৈয়দ জগলুল পাশাকে গত ৮ এপ্রিল প্রেফতার করলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ করেন। তার অনৈতিক হস্তেক্ষেপে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অথচ জগলুল পাশার বিরুদ্ধে গুলশান, যাত্রাবাড়ি এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় তিনটি হত্যা মামলা রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জগলুল পাশা ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকির একান্ত সচিব(পিএস) ছিলেন জগলুল পাশা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ২০০৭ সালে ফখরুদ্দিন-মইন উদ্দিন অবৈধ সরকারের আমলে তিনি মিথ্যা ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরে সহায়তা করে। শুধু তাই নয় সে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রধান করেন।
অবসরে গিয়ে জগলুল পাশা জালালাবাদ সমিতিতে যোগদান করেন এবং সেখানেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। দেশে এবং দেশের বাইরে তার বিপুল সম্পদ রয়েছে। তার স্ত্রী একজন সাধারণ স্কুল টিচার। অথচ তার নামে ঢাকায় তিনটি ডুপ্লেক্স অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। এছাড়া জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ(এনএইচএ) থেকে তিনি মিরপুরে একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ পেয়েছেন। যার বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা।
এতে আরও দাবি করা হয়, জগলুল পাশা সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকীর একান্ত সচিব ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে বসে সে সরকারের যাবতীয় গোপনীয় তথ্য আওয়ামী পন্থিদের কাছে পাচার করতেন। সে র-এর এজেন্ট ছিলো বলেও দাবি করে বৈষম্য বিরোধী কর্মচারি ঐক্য ফোরাম।
রাজধানীর বসুন্ধরায় তার একটি বাড়ি, ও সিলেট বিমানবন্দর সড়কের চৌখিদেখি এলাকায় ১৫ কাঠা জমিতে বিশাল বাড়ি রয়েছে। গত বছর জুলাই বিপ্লবের এক দিন আগে জগলুল পাশা পালিয়ে লন্ডন চলে যায়। পরবর্তীতে সে সরকারের একজন উপদেষ্টার আশ্বাসে গত মাসে দেশে ফিরে গ্রেফতার হয়। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানায় বৈষম্যবিরোধী কর্মচারি ঐক্য ফোরাম।