
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাডেমিক শাটডাউন ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার (১১ মে) দুপুরে শিক্ষক সমাজের উদ্দেশে পাঠানো এক খোলা চিঠিতে তারা আগামীকাল সোমবার (১২ মে) থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।
তবে জানা গেছে, পরীক্ষা ও পরিবহণ সেবাসহ অন্যান্য জরুরি সেবা শাটডাউনের আওতামুক্ত থাকবে৷ ইতিমধ্যে গত (৬মে) প্রশাসনিক সকল কার্যালয় তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা,যা এখনো পর্যন্ত একই অবস্থাই আছে।
আজ রবিবার (১১মে) দুপুরে দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের প্রতি এক চিঠিতে বিষয়টি জানান।
চিঠিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় গত ২৬ দিন ধরে চলমান আন্দোলন সর্বশেষ ১ (এক) দফা তথা এই অপেশাদার, মামলাবাজ, অযোগ্য উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে উপনীত হয়েছে। এই দাবি আদায়ে আমরা শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ ও আপোষহীন।
সরকার আমাদের দাবির প্রতি এখন পর্যন্ত কর্ণপাত করেনি। দীর্ঘদিন আন্দোলনের কারণে আমাদের আর পিছনে ফিরে যাওয়ার ন্যূনতম জায়গা নেই। দাবি আদায়ের এই আপোষহীন লড়াইয়ে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে আমরা ১২ মে, ২০২৫ তারিখ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাডেমিক শাটডাউন ঘোষণা করেছি। এবং তারা সকল শিক্ষকদের প্রতি অ্যাকাডেমিক ক্লাস বন্ধ রাখার সবিনয় অনুরোধ জানান।
জুলাই আন্দোলনে আহত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো.আরিফুল রহমান অনিক বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রথম স্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে আমাদের যে রকম ভিসি প্রত্যাশা ছিল, সরকার সে রকম ভিসি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে আজকের এই আন্দোলন। এখন আমাদের নতুন ভিসি দরকার। কিন্তু আমাদের এই বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে,কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি বর্গ যাতে ভিসি না হয়,যাতে তাদের দলীয় এজেন্ট বাস্তবায়ন করতে না পারে। এবং বর্তমানে শিক্ষার্থীরা যে অ্যাকাডেমিক শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছে তার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছি।
আন্দোলনকারী ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, আমরা যেকোনো উপায়ে ২৫টি বিভাগের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে আমাদের খোলা চিঠি পৌঁছে দিয়েছি। উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, চলমান এক দফা দাবিতে আন্দোলনে আমাদের সাথে এখন পর্যন্ত ১৮টি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা বিবৃতির মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করেছে। যেটা জোরালো জনমত হিসেবে কাজ করেছে। সকলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শিক্ষকদেরকে বিষয়টি অবহিত করেছি যেন শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তারাও ক্লাস বর্জন করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে স্বৈরাচার পুনর্বাসন ও জুলাই আন্দোলনের পক্ষে অবস্থানকারীদের হয়রানির অভিযোগ তুলে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ জন শিক্ষক বিবৃতি দিয়েছেন। যা বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়েকে ক্রমবর্ধমান ভাবে অস্থিতিশীল করে তুলছে।