Image description

গত এপ্রিল মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৫৯৩টি দুর্ঘটনায় ৮৬ নারী ও ৭৮ শিশূসহ প্রাণ হারিয়েছে ৫৮৮ জন। এর মধ্যে শুধু মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাতেই ২২৯ জন প্রাণ হারিয়েছে, যা মোট নিহতের প্রায় ৪০ শতাংশ।

এপ্রিল মাসে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১১২৪ জন। ত্রুটিপূর্ণ ও অযোগ্য যানবাহন, বেপরোয়া গতি, অদক্ষ ও মানসিকভাবে অস্থির চালক, মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন চলাচল, তরুণদের অনিয়ন্ত্রিত মোটরসাইকেল চালানো, ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসাধারণের উদাসীনতা এবং বিআরটিএ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ঘাটতি এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে । রোড সেফটি ফাউন্ডেশনে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

 

আজ রোববার (১১ মে) সকালে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পাঠানো মাসিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন পোর্টাল এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিল মাসে ২১৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২২৯ জন এবং আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। আর নৌডথে ৭টি দুর্ঘটনায় নিহত ৮, আহত ৪ এবং রেলপথে ২২ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৪ জন, আহত ৬ জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, ১৭৩টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫৪ জন। সবচেয়ে কম রংপুর বিভাগে ৩১টি দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩২ জন।

জেলাভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি চট্টগ্রামে ৩৫টি দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৪৬ জন। রাজধানীতে ৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়। দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি হয়নি নীলফামারী জেলায়।

তুলনামূলক পর‌্যালোচনায় গত মার্চ মাসের চেয়ে এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি প্রায় সমান। মার্চ মাসে ৫৮৭টি দুর্ঘটনায় ৬০৪ জন নিহত হয়েছিল। মার্চে প্রতিদিন গড়ে ১৯.৪৮ জন নিহত হয়, যা এপ্রিল মাসে হয় ১৯.৬।

প্রতিবেদন বলছে, দুর্ঘটনার অধিকাংশই ঘটছে অতিরিক্ত গতি ও অনিয়ন্ত্রিত চালনার কারণে। এই প্রবণতা রোধে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি এবং চালকদের মানসিক প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেয়ার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

এছাড়া, চালকদের পেশাগত নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করায় তারা মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন, যা সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ হয়ে উঠছে।

সুপারিশ হিসেবে দক্ষ চালক তৈরি, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও পথচারীদের ট্রাফিক আইন মানার বাধ্যবাধকতা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ এবং আলাদা সার্ভিস রোড তৈরি, মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কার্যকর করার প্রস্তাব দেওয়া হয় প্রতিবেদনে।