
প্রায় দুই বছর আগে ইউচ্যাটের মাধ্যমে ইরিছা চংয়ের (২৫) সঙ্গে ইলিয়াস হাওলাদারের ছেলে রনির পরিচয় হয়। এরপর প্রায়ই তাদের কথা হতো। একপর্যায়ে গত ১১ এপ্রিল চীন থেকে ভোলার সদর উপজেলার চন্দ্রপ্রসাদ গ্রামে চলে আসেন এই তরুণ।
এরপর প্রায় এক মাসের মতো বন্ধুর বাড়িতে থাকেন তিনি। একপর্যায়ে বন্ধুর ছোট বোন কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী নাবিয়া আক্তারকে পছন্দ করে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
প্রথমে নাবিয়ার পরিবার বিয়েতে রাজি ছিল না। পরে রাজি হলে গত সোমবার (৫ মে) ১০ লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এরপরই এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দূর-দূরান্ত থেকে চীনা এই যুবককে দেখতে ছুটে আসেন হাজারো মানুষ।
নাবিয়ার পরিবার জানায়, ইরিছা চং মুসলিম ধর্মাবলম্বী। চীনের লানজু শহরে তার জন্ম। তার বাবার নাম মেছউধা। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে ইরিছা দ্বিতীয়। তিনি লানজু শহরের একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন।
অন্যদিকে নাবিয়া আক্তার ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপ্রসাদ গ্রামের ইলিয়াস হাওলাদারের মেয়ে। তিনি স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষার্থী। নাবিয়া এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে দ্বিতীয়।
নাবিয়ার ভাই রনি জানান, ইউচ্যাটের মাধ্যমে চীনা এই তরুণের সঙ্গে তার প্রথম পরিচয় হয়। এরপর তিনি বাংলাদেশে আসার আগ্রহ জানান। একপর্যায়ে ১১ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশে আসেন। এক মাসের মতো তাদের বাড়িতে থাকেন। একপর্যায়ে তার ছোট বোন নাবিয়াকে তিনি পছন্দ করে ফেলেন। এরপর তরুণ জানান, নাবিয়াকে বিয়ে করা ছাড়া তিনি চীনে ফিরবেন না।
নাবিয়ার বাবা ইলিয়াস হাওলাদার জানান, প্রথমে তারা কেউই এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। পরে কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে তারা নাবিয়াকে ইরিছার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। এতে সবাই খুশি। জামাই তাদের পছন্দ হয়েছে।
বাংলাদেশি মেয়েকে বিয়ে করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করছেন ইরিছা চং। তিনি বলেন, নাবিয়া ও তার ভাইয়ের পাসপোর্টের কাগজপত্র ঠিকঠাক হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি তাদের নিয়ে চীনের উদ্দেশে রওনা হবেন।
চীনা যুবককে বিয়ে করতে পেরে খুশিতে আত্মহারা নাবিয়া আক্তার। তিনি বলেন, প্রথমে এই বিয়েতে কেউ রাজি না হলেও পরে সবার সম্মতিতে আমি রাজি হই। খুব দ্রুত আমরা চীনে চলে যাব। ইতোমধ্যে পাসপোর্টসহ আনুষঙ্গিক সব কাগজপত্র ঠিকঠাক করছি।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাইন পারভেজ বলেন, চীনা যুবক ভোলায় এসে বিয়ে করেছেন, এমন তথ্য পুলিশকে কেউ অবগত করেননি।