
মাঠে এবং সচিবালয়ে কর্মরত নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন এবং সরকারি কর্মচারী আইনে ‘সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) ১৯৭৯’-এর কালো ধারাগুলো সংযোজনের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয়ের কর্মচারী সংগঠনগুলো। যে কোনো মূল্যে তা প্রতিহত করা হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের (বাদিউল কবির-নিজাম উদ্দিন) অংশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভা থেকে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। বিষয়টিতে প্রায় একই রকম প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের নেতারা নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন না করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের (বাদিউল কবির-নিজাম উদ্দিন) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সচিবালয়ের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা পদোন্নতির বিদ্যমান সুযোগ থেকে চিরবঞ্চিত করতে মাঠপর্যায়ের কর্মচারীদের সঙ্গে একীভূত করে অভিন্ন নিয়োগবিধি করা হচ্ছে। পক্ষান্তরে প্রাপ্ততা অনুসারে আমাদের কোনো সমস্যা এখনো পূরণ করা হয়নি। নতুন আইন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত করার জোরালো কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে তা প্রতিহত করবে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাঠ প্রশাসনের নন-ক্যাডার কর্মচারীদের অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন বিষয়ে পর্যালোচনাপূর্বক সুপারিশ দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৩০ এপ্রিল যুগ্মসচিবের (বিধি-১) নেতৃত্বে আট সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। এটি খুবই উদ্বেগ ও চিন্তার বিষয়। এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগে সচিবালয়ে কর্মরত সর্বস্তরের কর্মচারীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া, হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের জন্য বর্তমান সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি করা হলে সচিবালয়ে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নসহ কর্মচারীদের সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য এটি একটি কূটকৌশল হতে পারে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেন অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ক মো. নজরুল ইসলাম।
বুধবার বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের (নূরুল ইসলাম-মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম) অংশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভা থেকে একই বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়নের পদক্ষেপে তারা ক্ষুব্ধ। মাঠ প্রশাসনের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা কখনো এক হতে পারে না। অনেকেই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মাঠ প্রশাসনের চাকরি ছেড়ে সচিবালয়ে চাকরিতে প্রবেশ করেছেন। নিয়োগবিধি একীভূত করে কুচক্রী মহল বিব্রত করার পাঁয়তারা করছে। এতে সচিবালয়ে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। যে কোনো মূল্যে তা প্রতিহত করা হবে।