
পাবনা বিআরটিএ অফিসে দালাল আর টাকা ছাড়া কোনো কাজই হয় না। টাকা না দিলে পরীক্ষায় ফেল দেখানো হয় এবং নানা অজুহাতে বছরের পর বছর হয়রানি করা হয়। আর টাকা দিলেই পাশ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আকস্মিক অভিযানে এমন তথ্য উঠে আসে।
বুধবার দুপুরে পাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচতলায় বিআরটিএর পাবনা কার্যালয়ে দুদকের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে। এতে নেতৃত্ব দেন দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধর।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তা বলেন, আমরা অভিযান চালানোর সময় বেশ কয়েকজন সেবাপ্রার্থীকে জিজ্ঞাসা করেছি। তাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এখানে দালাল ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এখানে কাজ করতে ১০-১২ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুস দিতে হয়। এমনও অভিযোগ আছে- ২০১৯ সালে কাগজপত্র দিয়েছেন কিন্তু কাজ হয় নাই, যখনই দালালের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয় তখনই কাজ হয়।
তিনি আরও জানান, মূলত দালাল আর টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না- এর সত্যতা পেয়েছি। টাকা দিলেই লাইসেন্সসহ সব ধরনের সেবা পাওয়া যায়। আমরা রেকর্ডভিত্তিক কাজ করার চেষ্টা করছি। রেকর্ডপত্র পেলেই সেগুলো দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠাব। এরপর সেখান থেকে নির্দেশনা পেলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
প্রসঙ্গত, পাবনা বিআরটিএ অফিসের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি এবং হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে দালাল চক্রের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স, নবায়ন, যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট নিয়ে অসংখ্য অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এখানে এসব অনিয়ম এবং জালিয়াতির মাধ্যমে ২০ কোটি টাকার দুর্নীতির একাধিক রিপোর্ট দৈনিক যুগান্তরে ছাপা হয়। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়; কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে এবং উচ্চ আদালতে রিট করে সেসব মামলা ফেলে রাখা হয়। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে সংশ্লিষ্ট অনেকেই পার পেয়ে যান। এখনো একই অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক এ অভিযান চালায়।