
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শ্রেণিকক্ষের ভেতরে জুয়া খেলার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার (২ মে) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।
উপজেলার ফাঁসিয়াখালীর রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একটি কক্ষের বেঞ্চে বসা অবস্থায় প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জুয়া খেলছেন। তার পেছনে ব্ল্যাকবোর্ড ও হাতের ডানপাশে লাল-সবুজ রং করা স্কাউটের বেশকিছু বাঁশও দেখা গেছে। এ সময় একজন ব্যক্তিকে খাটে বা বেঞ্চের মধ্যে শুয়ে থাকায় তার দুটি পা লক্ষ করা যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে জুয়া খেলাসহ বহু অভিযোগ আছে। কিন্তু আমরা এতদিন প্রমাণ পাইনি। এখন তার অপকর্মের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় প্রমাণ মিলেছে। এমন প্রধান শিক্ষকের স্কুলে থাকার কোনো বৈধতা নেই। আমাদের সন্তানরা তার কাছ থেকে কী শিখবে?
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এটি আমাদের পিকনিকের একটি ভিডিও। তিন বছর আগে স্কুল থেকে মেহেরপুরে আমরা পিকনিকে গিয়েছিলাম। ওই সময়ে কে বা কারা খেলার সময় ভিডিওটা করেছে। এটি আমার বিদ্যালয়ের ভিডিও না। মূলত বিদ্যালয়ের একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে আমার মানসম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য এটা করেছেন। আমার বিদ্যালয়ে এ ধরনের কোনো শ্রেণিকক্ষ নেই।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহেদুল মোস্তফা বলেন, রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জুয়া খেলার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেখেছি। ভিডিওটি দেখার পরে বিদ্যালয়ের অপরাপর শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তারা বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ডের বিষয়টি বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধিকে অবহিত করা হয়। বিষয়টি সম্পর্কে তদন্তপূর্বক বিধিমতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ইউএনও বিষয়টি আমাকে জানালে তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের কাছে ফোন করে জানতে চাই। তখন তিনি ভিডিও ফুটেজটি অনেক পুরনো একটি পিকনিকের বলে জানিয়েছেন। তারপরও বিষয়টি নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে শিক্ষা কর্মকর্তা জানান।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতিকে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।