
বরগুনার আমতলীতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে ১৬ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে কুয়েত প্রবাসী মহিউদ্দিন বিশ্বাসের। ছাত্রীর অভিযোগ, পরিবার বেশ কয়েকবার বিয়ের উদ্যোগ নিলেও প্রবাসীর বাধায় তা হয়নি। এরই একপর্যায়ে শুক্রবার (২ মে) সকাল থেকে তিনি ফোনে জানিয়ে দেন, তাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। এমন কথায় রাত ৯টার দিকে তার বাড়িতে অনশনে বসেছেন ছাত্রী।
জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের এক ছাত্রীর সঙ্গে উপজেলার একটি গ্রামের মহিউদ্দিন বিশ্বাস ১৬ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন মহিউদ্দিন দশম শ্রেণিতে এবং ছাত্রী অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীর। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ ক্লাসে অধ্যয়নরত রয়েছেন।
২০১৭ সালে মহিউদ্দিন কুয়েত চলে যান। এর পর থেকে কয়েকবার ছাত্রীর পরিবার তাকে বিয়ে দিতে উদ্যোগ নিলেও তার বাধায় বিয়ে পণ্ড হয়। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রীর বিয়ের প্রস্তাব এলেই ভেঙে দিতেন তিনি। ৮ বছর পর গত ৪ মার্চ তিনি কুয়েত থেকে বাড়িতে আসেন। এরপর দুজনের মধ্যে বেশ ভালো সম্পর্ক চলে আসছে। তাদের প্রেমের সম্পর্ক দুই পরিবারও জানে। কিন্তু এখন তাকে তিনি বিয়ে করতে রাজি নন।
এরইমধ্যে প্রবাসী মহিউদ্দিনের সঙ্গে ছাত্রীর বিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে অনশনে বসা ছাত্রীর খোঁজ খবর নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, মহিউদ্দিন বিশ্বাস মেয়েটির সঙ্গে প্রেম করেছেন, তা এলাকার সবাই জানে। এত বছর একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করে কেন তাকে বিয়ে করবে না?
শনিবার (৩ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রী কুয়েত প্রবাসী মহিউদ্দিনের বাড়িতে অনশনে বসে আছেন। মহিউদ্দিনের বড় ভাই, ছোট ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। তবে ঘটনার পর থেকে প্রবাসী পলাতক আছেন।
অনশনে বসা ছাত্রী বলেন, ‘১৬টি বছর আমার জীবন থেকে মুছে গেছে। আমার পরিবার বেশ কয়েকবার বিয়ের উদ্যোগ নিয়েও ওর কারণে ব্যর্থ হয়েছে। বিয়ের প্রস্তাব এলেই মহিউদ্দিন আমার বিয়ের প্রস্তাব ভেঙে দিয়েছেন। আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এখন আমাকে বলে বিয়ে করবে না। তাই আমি নিরুপায় হয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেছি।’
প্রবাসীর মহিউদ্দিন বিশ্বাসের মা বলেন, ‘ছেলে-মেয়ে প্রেম করেছে। এখন ছেলে বিয়ে করতে চায় না, আমি কি করব?’ এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মহিউদ্দিন বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’