
শেয়ারহোল্ডারদের চমকে দিয়ে ওয়ারেন বাফে ঘোষণা করেছেন তিনি এই বছরের শেষে অবসর নিতে চান। বাফেট বলেছেন যে তিনি বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের বোর্ডের কাছে সুপারিশ করবেন যে বছরের শেষে ভাইস-চেয়ারম্যান গ্রেগ অ্যাবেলকে যাতে সিইও পদে আনা হয়। বাফেট বলেন, আমি মনে করি এই বছরের শেষে গ্রেগকে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) করা উচিত।
অ্যাবেল বহু বছর ধরে বাফেটের মনোনীত উত্তরসূরি এবং তিনি ইতিমধ্যেই বার্কশায়ারের সমস্ত নন-ইনস্যুরেন্স ব্যবসা পরিচালনা করেন। কিন্তু মনে করা হতো, বাফেটের মৃত্যুর পর তিনি হয়তো দায়িত্ব নেবেন না। এর আগে ৯৪ বছর বয়সী এই বিনিয়োগকারী প্রায় বলেছিলেন যে, তার অবসর নেয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই। পাঁচ ঘন্টার প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে বাফেট শেয়ারহোল্ডারদের সামনে তার পদত্যাগের খবরটি ঘোষণা করেন। এই ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে তা জানতেন তার দুই সন্তান, হাওয়ার্ড এবং সুসি বাফেট। মঞ্চে বাফেটের পাশে বসে থাকা অ্যাবেলও এর কোনো আভাস পাননি।
অনেক বিনিয়োগকারী বলেছেন যে, তারা বিশ্বাস করেন অ্যাবেল বার্কশায়ার পরিচালনায় ভালো কাজ করবেন, তবে বার্কশায়ারের বিনিয়োগে তিনি কতটা দক্ষ হবেন তা দেখার বিষয়। বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের একটি শেয়ারও বিক্রি করার তার কোনো অভিপ্রায় নেই বলে জানিয়েছেন বাফেট। কোম্পানির নেতৃত্বের ৬০ বছর পূর্ণ করার স্বীকৃতিস্বরূপ বাফেটের ঘোষণার পর হাজার হাজার বিনিয়োগকারী দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান।
বাফেট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ভয়াবহ বৈশ্বিক পরিণতি সম্পর্কে ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছেন। তার বার্ষিক সভায় জড়ো হওয়া হাজার হাজার বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বাফেট বলেছেন, বাণিজ্যকে অস্ত্র হিসেবে দেখা উচিত নয় যুক্তরাষ্ট্রের। তবে বাণিজ্য যে যুদ্ধের মতো হতে পারে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
বাফেট বলেন, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি বাড়িয়েছে, বিশ্বের বাকি অংশকে ক্ষুব্ধ করেছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘বড় ভুল’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তার কথায় দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের ভারসাম্য বজায় রাখাই সর্বোত্তম উপায়। তিনি মনে করেন না যে, ট্রাম্প তার ব্যাপক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে এটি সঠিকভাবে করছেন। কারণ যত দেশ সমৃদ্ধ হবে বিশ্ব নিরাপদ হবে। বাফেট বলেছেন, আমাদের উচিত বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্য করার চেষ্টা করা। আমাদের যা সবচেয়ে ভালো হয় তা করা উচিত এবং তাদেরও যা সবচেয়ে ভালো হয় সেটাই করা উচিত।
বাফেট বলেন, আমেরিকা তার জন্মের পর থেকেই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং সকলের জন্য সমতার প্রতিশ্রুতি দিলেও বহু বছর পরেও তা পূরণ হয়নি। কিন্তু আজ যা ঘটছে তা দেশ সম্পর্কে তার দীর্ঘমেয়াদী আশাবাদকে পরিবর্তন করতে পারেনি।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট