
বর্ষা মৌসুম মানেই ঢাকায় জলাবদ্ধতা। আসছে বর্ষা মৌসুম, মূল মৌসুম আসার আগেই সম্প্রতি দুই/তিন দিন যে বৃষ্টি হয়েছে, তাতে ডুবে যায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা। তাই জোর দিয়েই বলা যায়, আসন্ন বর্ষায় এবারও ডুবতে যাচ্ছে ঢাকা।
গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, সামান্য বৃষ্টিতে রাজধানীর অলিগলি ও প্রধান প্রধান সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। বৃষ্টি একটু দীর্ঘ সময় স্থায়ী হলে রীতিমতো ডুবে যায় ঢাকা শহর। হাঁটু ও কোমর সমান পানিতে নাকাল হতে হয় নগরবাসীকে। অথচ জলাবদ্ধতা নিরসনে বহু প্রকল্প ও পদক্ষেপ নিয়ে আসে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু ফলাফল যেন শূন্যই থেকে যাচ্ছে। কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। ফলে এবারও ডুববে ঢাকা— এমন আশঙ্কায় আতঙ্কিত নগরবাসী।
অথচ প্রতি বছরই জলাবদ্ধতা নিরসনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয় সরকার। বছর বছর অর্থ বরাদ্দের পরিমাণও বাড়ে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। ক্ষেত্রবিশেষ ভোগান্তির পরিমাণ বাড়ে। বছরের পর বছর জলাবদ্ধতা নিরসনে বহু প্রকল্প ও পদক্ষেপ হাতে নিয়ে প্রচুর অর্থ খরচ করেছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে দুই সিটি কর্পোরেশন প্রায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল, কাজও করেছে কিছু। কিন্তু ফল ছিল শূন্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জলাবদ্ধতা নিরসনে গত ২০২৩- ২৪ অর্থবছরে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের বরাদ্দের ২০০ কোটি টাকার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) জলাবদ্ধতা নিরসনে সরাসরি ৯০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখে। এছাড়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের (খাল, জলাশয়, নর্দমা পরিষ্কার) জন্য ৩০ কোটি টাকা, খাল-পুকুর ও জলাশয় পুনরুদ্ধারে আরও দুই কোটি টাকা এবং পানির পাম্প ক্রয় ও স্থাপনে আরও এক কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।
অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জলাবদ্ধতা নিরসনে পাম্প হাউজের যন্ত্রপাতি আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও ক্রয়ে বরাদ্দ রাখে ২৫ কোটি টাকা। খালের উন্নয়ন, সীমানা নির্ধারণ ও বৃক্ষরোপণে বরাদ্দ রাখে আরও ৩৮ কোটি টাকা। এছাড়া, নর্দমা পরিষ্কারে ১১ কোটি, খাল পরিষ্কারে পাঁচ কোটি, খাল-কালভার্ট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে ১০ কোটি, পাম্প হাউজ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে আট কোটি, লেক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে তারা।
একসময় রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্বে ছিল ঢাকা ওয়াসা। পরে রাজধানীর সব নালা ও খাল দুই সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে ঢাকা ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা গত ১৫ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করলেও সমস্যা যেন নগরবাসীর পিছু ছাড়েনি।
আগে ঢাকা মহানগরীর প্রধান প্রধান ড্রেন লাইন নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসা এবং শাখা লাইনগুলোর দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের ওপর ন্যস্ত ছিল। ওই সময় রাজধানীর মোট ড্রেনেজ লাইনের মধ্যে ৩৮৫ কিলোমিটার ঢাকা ওয়াসার অধীন এবং প্রায় দুই হাজার ৫০০ কিলোমিটার ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের অধীনে ছিল। এর বাইরে ৭৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ২৬টি খাল এবং ১০ কিলোমিটার বক্স কালভার্ট রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও ছিল ঢাকা ওয়াসার। যে কারণে বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে সংস্থাগুলো একে অন্যের ওপর দায় চাপানোর সুযোগ পেত।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঢাকার সিংহভাগ এলাকা ডুবলেও নির্দিষ্ট কিছু এলাকা বেশি জলাবদ্ধতার স্থান বা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন। সেসব স্থানে এবারও বেশি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরখান, দক্ষিণখান, হরিরামপুর, বাড্ডা, ভাটারা, বিমানবন্দর সড়ক, বনানী কবরস্থান সড়ক ও রোকেয়া সরণি
কিন্তু ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ওয়াসার দায়িত্বে থাকা সব নালা ও খাল দুই সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে রাজধানীর জলাবদ্ধতার সব দায় এসে পড়ে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ওপর। তারাও গত কয়েক বছরে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে। কিন্তু এর সুফল পায়নি নগরবাসী।
এবারও যেসব এলাকায় থাকবে জলাবদ্ধতা
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঢাকার সিংহভাগ এলাকা ডুবলেও নির্দিষ্ট কিছু এলাকা বেশি জলাবদ্ধতার স্থান বা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন। সেসব স্থানে এবারও বেশি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরখান, দক্ষিণখান, হরিরামপুর, বাড্ডা, ভাটারা, বিমানবন্দর সড়ক, বনানী কবরস্থান সড়ক ও রোকেয়া সরণি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকার মধ্যে এবারও জলাবদ্ধতা বেশি হতে পারে নিউ মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, ঢাকা কলেজ এলাকা, নায়েম সড়ক, বকশীবাজার মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এলাকা, মুগদা প্রধান সড়ক ও মুগদা হাসপাতালের আশপাশের এলাকা, জুরাইন আলমবাগ, মিতালী স্কুল রোড এবং রাজারবাগ গ্রিন লাইন বাস কাউন্টারের সামনের সড়কে
অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকার মধ্যে এবারও জলাবদ্ধতা বেশি হতে পারে নিউ মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, ঢাকা কলেজ এলাকা, নায়েম সড়ক, বকশীবাজার মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এলাকা, মুগদা প্রধান সড়ক ও মুগদা হাসপাতালের আশপাশের এলাকা, জুরাইন আলমবাগ, মিতালী স্কুল রোড এবং রাজারবাগ গ্রিন লাইন বাস কাউন্টারের সামনের সড়কে।
তবে আশার কথা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ২ ফেব্রুয়ারি নতুন করে খাল বাঁচানোর উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে। যেখানে ঢাকার খালগুলোতে ‘ব্লু নেটওয়ার্ক’ সৃষ্টি করার উদ্যোগ গ্রহণের কাজ চলমান।
এই কার্যক্রমের আওতায় ঢাকার খালগুলোতে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনা এবং খাল খনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসির ছয়টি খাল খননের কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং আরও ১৩ টিসহ ১৯টি খাল খননের কার্যক্রম চলতি বছরের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। কার্যক্রমগুলোর অগ্রগতি হলে ঢাকায় আগের মতো আর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না।
সার্বিক বিষয় নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘খাল ও জলাশয়ের অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চলমান আছে। আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে হাইক্কার খালের (কাটাসুর) ওপর অবৈধভাবে গড়ে তোলা একটি দোতলা ভবন সম্পূর্ণ এবং তিনতলা ভবনের আংশিক ভেঙে দিয়েছে। এই খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং খাল খনন করে লাউতলা খালের সঙ্গে সংযোগ করে দিব। ডিএনসিসির কবরস্থানের দেওয়ালও ভেঙে দিয়ে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। ফলে বৃষ্টির পানি বা বন্যার পানি খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তুরাগে চলে যাবে।
‘আমি ঢাকাবাসীকে বলতে চাই, যারা এখনও সরকারি খাল-বিল দখল করে নাকে তেল দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন, তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। যারা সরকারি জমি, খাস জমি দখল করে স্থাপনা বানিয়ে ভোগদখল করছেন, তাদের বলছি, ঘুম থেকে জেগে দখল করা জায়গাটা ছেড়ে দিন। খালগুলো দখলমুক্ত করে পানির প্রবাহ ঠিক করা গেলে জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে যাবে।’
অন্যদিকে, জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তুতির বিষয়ে সংস্থাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমাদের প্রস্তুতি ও কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে, বর্ষার জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ খুবই চ্যালেঞ্জিং। খাল উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নকাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতার স্থানগুলো চিহ্নিত করে খাল ও নর্দমা পরিষ্কারের কাজ চলমান রয়েছে আমাদের।
সার্বিক বিষয় নিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। নিয়ম মেনে সঠিক কার্যক্রম হিসেবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। বর্তমানে এসব কাজের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের, তাই তাদের অন্যদের ওপর দোষ চাপানোর কোনো সুযোগ নেই। কাজের সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন তাদেরই করে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে হবে।’
ঢাকায় প্রতি বছর কেন জলাবদ্ধতা
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ঢাকার পানি তিনটি মাধ্যমে আশপাশের নদ-নদীতে গিয়ে পড়ে। এগুলো হচ্ছে- পাম্প স্টেশন, স্লুইসগেট ও খাল। বর্তমানে বেশ কয়েকটি পাম্প স্টেশন নষ্ট হয়ে আছে। একইভাবে স্লুইসগেটগুলোও অকেজো অবস্থায় আছে। আর খালগুলোর অবস্থা ভালো নয়, সেগুলো পানি প্রবাহের জন্য উপযুক্ত নয়। অবৈধ দখলের পাশাপাশি নানা ধরনের বর্জ্য জমে খালগুলোতে কয়েক স্তরের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। এর মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য। এগুলো ঢাকার ড্রেন, নালা আর খালে গিয়ে পড়ছে। এসব বর্জ্য খালে বা ড্রেনে আটকে থাকছে, যে কারণে পানি নামতে পারছে না। আবার কিছু খাল এখনও দখল অবস্থায় আছে। বাকিগুলো যেভাবে সংকুচিত করা হয়েছে, তা দিয়ে পানির প্রবাহ সম্ভব নয়। ফলে বৃষ্টি হলেই পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে রাজধানী ঢাকা।
বৃষ্টি হলেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে দেখা যায়। আসন্ন বর্ষাতেও একই ফল দেখা যাবে বলে ধারণা নগরবাসীর। সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতা হওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজধানীর নিউ মার্কেট, আজিমপুর, নীলক্ষেত, বকশিবাজার, মালিবাগ, শান্তিনগর, সায়েদাবাদ, শনির আখড়া, পুরান ঢাকা, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, ধানমন্ডি, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, আরামবাগ, মতিঝিল, বনানী, খিলক্ষেত, উত্তরার কিছু অংশ, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি, মিরপুর ১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশ, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তা, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতা দেখা যায় নিয়মিত।
বারবার জলাবদ্ধতায় ক্ষুব্ধ নগরবাসী
প্রতি বছর এত কাজ, এত প্রকল্প তবুও কেন ঢাকাবাসীকে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে হয়— এটা নিয়ে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার বেসরকারি চাকরিজীবী হাবিবুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যায় ধানমন্ডি এলাকা। শুধু ধানমন্ডি নয়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা বৃষ্টির পানিতে থইথই করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজের কাজ কিছুই করে না। প্রতি বছর জলাবদ্ধতা নিরসনে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ থাকে, লোক দেখানো কাজও হয়। কিন্তু এর কোনো সুফল আমরা পাই না। ধারণা করছি এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না, ডুববে ঢাকা।
রাজধানীর নিউ মার্কেটের নিচতলার একটি দোকানের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন। ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বছর বর্ষায় কয়েকবার আমাদের দোকান ডুবে যায়। একবার দোকানে পানি ঢোকা মানেই লাখ লাখ টাকার ক্ষতি। এমন কোনো বছর নেই যে বর্ষাকালে নিউ মার্কেটের নিচতলা ডুবে যায় না। আমরা চাই জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। প্রতি বছর আমরা সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগ জানাই। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেয় না। আশা করব এ বছর বর্ষার আগেই জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি কর্পোরেশন উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
রাজধানীতে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সিএনজি চালান মোবারক আলী। তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেই রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে এ সমস্যা সবচেয়ে বেশি থাকে। কতবার জলাবদ্ধতায় সিএনজির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়ে ঠেলে নিয়ে যেতে হয়েছে। সবার মতো আমরাও চাই রাজধানী জলাবদ্ধতামুক্ত হোক। এটি যাদের দায়িত্ব তারা যেন সবকিছু আগেভাগেই ঠিক করে ফেলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এটিই আমাদের অনুরোধ।