Image description

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ২২ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মামলার আসামি ১৪ জন কর্মকর্তাও রয়েছেন। আজ মঙ্গলবার কমিশন সভায় হঠাৎ করেই তাঁদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বরখাস্ত হওয়া এক কর্মকর্তাসহ বিএসইসির একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী এবং পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালামকে কল করা হলেও কেউই রিসিভ করেননি। তবে কমিশনার ফারজানা লালারুখ ফোনকলে পাওয়া যায়। তিনি এই তথ্য অস্বীকার করেননি।

ফারজানা লালারুখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি অফিস থেকে ফিরছি। এই মুহূর্তে খুবই ক্লান্ত। এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না। যখন জানার আপনারা জেনে যাবেন।’

বরখাস্ত হওয়া বিএসইসির এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগে থেকে এজেন্ডা ঠিক না করে কমিশন সভায় হঠাৎ করেই ২২ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মামলার আসামি ১৪ জনও আছেন।

বিএসইসির আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কোনো অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিসিশান বা অফিস অর্ডার হয়নি। কালকে হয়তো অর্ডার হয়ে যাবে।’

গত ৪ মার্চ বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কমিশন। কমিশনের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে দায়িত্ব থাকাকালে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও কমিশন আরও অনেক কর্মকর্তাকে বিভিন্ন ইস্যুতে শোকজ করে। অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানা যায়।

এ ঘটনায় বিএসইসির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়। সাইফুর রহমানকে অবসরে পাঠানোর পরের দিন বুধবার কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে কথা বলতে চেয়ারম্যান-কমিশনারদের ফ্লোরে সমবেত হন।

তবে চেয়ারম্যান-কমিশনারদের দাবি, কর্মকর্তারা তাঁদেরকে অবরুদ্ধ করেন। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় চেয়ারম্যান-কমিশনাররা কার্যালয় ত্যাগ করেন।

পরের দিন বৃহস্পতিবারও কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করেন। তবে এদিন বিএসইসি চেয়ারম্যার তাঁর গানম্যান আশিকুর রহমানকে দিয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় বিএসইসির ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করান। এর মধ্যে সাইফুর রহমানকে আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আরেক নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম পদত্যাগ করেন। বাকি ১৪ জন কর্মকর্তা জামিন নিয়ে কাজে ফিরেছিলেন। গত ২১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় সেই মামলায় কর্মকর্তাদের জামিনও হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে ১৪ জনসহ আরও ৮ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন রাশেদ মাকসুদের কমিশন।

মামলার আসামি যারা

বিএসইসির মামলায় আসামিরা হলেন— বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭), নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন (৩০), সহকারী পরিচালক আবদুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।