Image description

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে মামলার প্রধান আসামি মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুলকে ঢাকার কদমতলী থানাধীন জুরাইন রেললাইন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ রোববার বিকেলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৫ এপ্রিল রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পূর্ব আগানগরের মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় উদ্ধার করা হয় নুপুরের খণ্ডিত মৃতদেহ। পরে ২৭ এপ্রিল হাসনাবাদ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির কাছে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে আরও তিনটি খণ্ডিত দেহাংশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন বিথী আক্তার (২৪), তাঁর শিশু পুত্র রাফসান (৪) ও নুপুর (২৫)।

সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত মহিউদ্দিন হাওলাদার শিমুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।

গ্রেপ্তার মহিউদ্দিন হাওলাদার স্বীকার করেন, বিথী আক্তার তাঁর কারখানায় কাজ করতেন। সেখানে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং ২০১৭ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। তবে আগের স্ত্রী রুমা বিষয়টি জানতে পেরে মহিউদ্দিনকে বিথীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করতে বাধ্য করেন। পরে বিথী আক্তার অন্য এক যুবক রুবেলকে বিয়ে করেন এবং তাঁদের ঘরে রাফসান জন্ম নেয়।

এরপরও মহিউদ্দিন বিথীর সাথে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং মীরেরবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বসবাস শুরু করেন।

ঘাতক মহিউদ্দিনের আগের স্ত্রী রুমা বিষয়টি আবার জানতে পারলে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। অন্যদিকে বিথী আক্তারও মহিউদ্দিনকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন।

এমন অবস্থায় ২৫ এপ্রিল সকালে মহিউদ্দিন বিথীর বাসায় যান। সেখানে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে গামছা দিয়ে বিথীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। ঘটনার সাক্ষী হয়ে পড়ায় তাঁর শিশু সন্তান রাফসান এবং সাবলেট ভাড়াটিয়া নুপুরকেও একইভাবে হত্যা করেন।

পরে তিনজনের মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন বস্তায় ভরে ফেলে দেন— রাফসানের খণ্ডিত দেহ বেয়ারা এলাকার ঝোপে, নুপুরের দেহাংশ মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে, বিথীর দেহাংশ বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

মোবাইল রিচার্জ কার্ডের তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরেই পুলিশ তার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পর তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রবিবার রাতে শিশু রাফসানের খণ্ডিত দেহ উদ্ধার করা হয়। তবে বিথী ও নুপুরের মস্তক এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।