Image description

Sadiqur Rahman Khan (সাদিকুর রহমান খান)


সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জন্য কবর খুঁড়তে হয়েছিলো ২ টা।
একটা না।
ফাঁসির ৪ ঘন্টা আগেও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী জানতেন না, আজকেই তাকে যেতে হবে।
ফ্যামিলি যখন শেষবারের মতো দেখা করতে যায়, তখন সেই ফ্যামিলির কাছেই তিনি প্রথম জানতে পারেন যে আজকেই সেই দিন।
তাঁর হাতে সময় আছে আর ৪ ঘন্টা।
উনি কিছুটা কষ্ট পেয়েছিলেন। জেলারকে বলেছিলেন, অন্তত আমাকে তো বলতে পারতি রে, একটা প্রিপারেশন নেওয়ার ব্যাপার আছে না?
এরপর তিনি ফ্যামিলিকে জানান, উনি ১৯৭৮ সালে এক বক্তব্যে রাঙ্গুনিয়ার মানুষের কাছে ওয়াদা করেছিলেন, যে আমার কবর এখানেই হবে।
তো শেষ ইচ্ছা শুনেই চৌধুরী পরিবার রাঙ্গুনিয়াতে কবর খননের কাজ শুরু করে।
কী অদ্ভুত জীবন!!
মানুষটা তখনও বেঁচে আছে, অথচ কবর খোড়া শুরু হয়ে গেছে।
বাট ফাঁসি কার্যকরের পর জেলার সাফ জানিয়ে দেন, লাশ রাঙ্গুনিয়া যাবে না। লাশ অবশ্যই রাউজানে নিতে হবে।
অনেক চেষ্টা করে টরেও যখন মানানো যায়নি, তখন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কাজিন সালমান এফ রহমানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার কাছে বলা হয়, উনি যেন জেলারকে বলে দেন, লাশ রাঙ্গুনিয়াতে দাফ করার ব্যাপারে।
শেখ হাসিনা স্পষ্ট জানাইয়া দেন, রাঙ্গুনিয়া না, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দাফন রাউজানেই করতে হবে।
শেষ পর্যন্ত রাউজানে আরেকটা কবর খোড়া হয়।ওখানেই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দাফন করা হয়।
আমি শুধু ভাবি, ঠিক কতটা বিদ্বেষ পুষে রাখলে এই কাজটা করা যায়?
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মরতে হয়েছিলো হাসিনার ব্যক্তিগত রাগ, ক্ষোভ আর ঘৃণার কারণে। জানেন কি না, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে সাক্ষী দেওয়ার জন্য ১০০ জনের একটা তালিকা জমা দেওয়া হলেও হাসিনা প্রমিনেন্ট সাক্ষীদের কাউকেই এলাউ করে নাই।
এন্ড এই রায় আদালতে লেখা হয় নাই। বরং এই রায় লেখা হয়েছিলো সরাসরি শেখ হাসিনার নির্দেশে আইন মন্ত্রণালয়ে বসে।
রায়ের ২ দিন আগেই এই রায়ের কপি সালাহউদ্দিন চৌধুরীর ফ্যামিলির কাছে চলে আসে।
ঐটা এখনও আছে।
আদালতে রায় লেখা হলে রায়ের কপি রায় হওয়ার দুইদিন আগেই বের হলো কেমনে?
যাইহোক, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচার একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে। বিচারের নামে ঠিক কতটা জঘন্য কাজ করা সম্ভব, সেইটা এই মামলাটা স্টাডি করলেই পাওয়া যাবে।
আর সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জন্য খোড়া দুইটা কবর উদাহরণ হয়ে থাকবে শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্রের।
অনেকেই বলেন শেখ হাসিনা খুনি, ফ্যাসিস্ট ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি বলি, না। শুধু ফ্যাসিস্ট শব্দটা দিয়ে শেখ হাসিনাকে ব্যখ্যা করা সম্ভব না। শেখ হাসিনা ছিলো আরো অন্য কিছু।
ফ্যাসিস্টরা তো জীবিত মানুষের অধিকার হরণ করে।
হাসিনা এমনকি একজন শহীদের শেষ ইচ্ছা এবং লাশের অধিকার পর্যন্ত আমাদের কাছে থেকে কেড়ে নিয়েছিলো।
এন্ড আমি জানি না, ১০০ টা নমরুদ আর ১০০ টা ফেরাউন এক হলেও একজন হাসিনার সমান নৃশংস হওয়া সম্ভব ছিলো কি না!!