Image description

নরওয়ের সর্ববৃহৎ পেনশন তহবিল কেএলপি ঘোষণা দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অশকশ করপোরেশন ও জার্মানির তাইসেনক্রাপ কোম্পানির সঙ্গে আর কোনো বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখবে না। কারণ, এই দুই প্রতিষ্ঠান ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে সরঞ্জাম ও সামরিক যান সরবরাহ করছে। সেসব যান ও সরঞ্জাম গাজায় চলমান যুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জাতিসংঘের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। 

 

কেএলপি’র দায়িত্বশীল বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান কিরান আজিজ বিবৃতিতে জানান, ২০২৪ সালের জুন মাসে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহকারী বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে আসে। আমাদের অনুসন্ধানে দেখা যায় অশকশ এবং তাইসেনক্রাপ  উভয়ই মানবাধিকার লঙ্ঘনের সম্ভাব্য ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই তাদেরকে আমরা আমাদের বিনিয়োগ তালিকা থেকে বাদ দিয়েছি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। 

কেএলপি জানায়, অশকস করপোরেশনে তাদের বিনিয়োগ ছিল প্রায় ১.৮ মিলিয়ন ডলার। তাইসেনক্রাপে বিনিয়োগ ছিল ১ মিলিয়ন ডলারের মতো। ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত কেএলপি তহবিলের বর্তমান সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১১৪ বিলিয়ন ডলার। এতে প্রায় ৯ লাখের বেশি সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী পেনশন সুবিধার আওতায় রয়েছেন। কেএলপির সঙ্গে যোগাযোগে অশকশ নিশ্চিত করেছে যে, তারা ইসরাইলকে সামরিক যানবাহন ও খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেছে এবং এখনও করছে। অন্যদিকে তাইসেনক্রাপ জানিয়েছে, তারা ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে চারটি সা’রা-৬ যুদ্ধজাহাজ সরবরাহ করেছে এবং চলতি বছর একটি সাবমেরিন সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে, যখন কেএলপি জানতে চায় এই সরবরাহকৃত সরঞ্জাম কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, তখন কোম্পানি দুটি কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য বা মানবাধিকার পর্যবেক্ষণের প্রমাণ দেখাতে পারেনি। 

কিরান আজিজ বলেন, মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কোম্পানিগুলোর উচিত ছিল যথাযথ পর্যবেক্ষণ ও স্বচ্ছতা দেখানো। তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আগেও কেএলপি এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০২১ সালে মটোরোলা সহ ১৬টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করে, যেগুলো অবৈধ ইসরাইলি বসতির সাথে যুক্ত ছিল। একই বছরে আদানি পোর্টস থেকেও বিনিয়োগ তুলে নেয়, কারণ কোম্পানিটির মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল।

২০২৪ সালে ক্যাটারপিলার কোম্পানি থেকেও বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে। কারণ ইসরাইল ক্যাটারপিলারের বুলডোজার ব্যবহার করে ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ধ্বংস করে। কেএলপির এ সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ইউরোপের অন্য তহবিলও ইসরাইল বা তার সহায়ক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে। এর মধ্যে আছে নরওয়ের সোভারিন ওয়েলথ ফান্ড, ডেনমার্কের বৃহত্তম পেনশন তহবিল ও বৃটেনের ইউনিভার্সিটিজ সুপারঅ্যানুয়েশন স্ক্রিম (ইউএসএস)। এসব তহবিল মূলত গাজায় ইসরাইলি সামরিক অভিযান এবং অবৈধ পশ্চিম তীরের বসতি স্থাপন সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।