
ডেঙ্গু রোধে এডিস মশার প্রজননস্থল নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কোনো কার্যকর সমাধান সম্ভব নয়—এমনই জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ও অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, “মেয়র আসবে, মেয়র যাবে, সরকার আসবে, সরকার যাবে; কিন্তু মশার জায়গায় মশাই থাকবে।”
তিনি বলেন, এডিস মশার লার্ভা সাধারণ মানুষের চেনার সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং দিক হলো, এটি সাপের মতো নড়াচড়া করে। লার্ভা এস আকারে প্যাঁচ দিয়ে নড়ে এবং সেখান থেকেই ধাপে ধাপে পিউপা ও পূর্ণাঙ্গ মশায় রূপ নেয়।
প্রফেসর বাশার বলেন, “এডিস মশা ডিম পাড়ে পাত্রে জমে থাকা পানির কানায়। এমনকি পাত্রটি যদি একদম শুষ্কও হয়, কিন্তু কিছুটা ভেজা থাকে—সেখানেও ডিম পাড়ে।”
ডেঙ্গু প্রতিরোধে তিনি বলেন, ইন্টিগ্রেটেড মশক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার চারটি উপাদানই জরুরি—পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, জীবাণু নিয়ন্ত্রণ, রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ। এই চারটি উপাদানকে একত্রে প্রয়োগ করতে না পারলে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের নাগরিকদের সচেতন হতে হবে—এডিস মশা দেখতে কেমন, লার্ভা কেমন, কোথায় জন্মায় এসব জানতে হবে। তখন সে নিজে সতর্ক হতে পারবে এবং আশপাশকে নিরাপদ রাখতে পারবে।”
ডেঙ্গুতে মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সচেতন থাকলে ডেঙ্গুতে কোনো রোগীর মৃত্যু হওয়ার কথা না। পর্যাপ্ত পানি ও তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সঠিক চিকিৎসা নিলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ, যার প্রধান কারণ নাগরিকদের অসচেতনতা। তিনি বলেন, “প্রত্যেক নাগরিক যদি নিজের অবস্থান থেকে সচেতন হয়ে কাজ করে, তাহলে এটি একসময় সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হবে। আর তখনই ডেঙ্গুর প্রকোপ ও এডিস মশার ঘনত্ব কমে আসবে।”
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=AtXCOQPl3x8