
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আবাসিক শিক্ষার্থীর নিরাপদ স্থান তার হল। কিন্তু সেই হল থেকেই যখন প্রভোস্টের সহায়তায় কোনো শিক্ষার্থী ‘গুম’ হয়ে যান, তখন তা আঁতকে ওঠার মতো ব্যাপার।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর ভাগ্যে এমন ঘটনাই ঘটেছে। নূর মোহাম্মাদ অনিক ও মো. মোজাহিদুল ইসলাম রাফি নামের ওই দুই শিক্ষার্থী স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে ‘গুম’ হয়েছিলেন হল থেকে। জুলাই অভ্যুত্থানে হাসিনার পতন ঘটলেও অনিক-রাফি এখনো কারাবন্দি।
নূর মোহাম্মদ অনিক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের ’১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক ছাত্র। আর মোজাহিদুল ইসলাম রাফি স্ট্যাটিস্টিকস ডিসিপ্লিনের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র।
প্রভোস্ট ডেকে নেন, মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকধারীরা
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি সকাল ৭টায় নাস্তা করানোর কথা বলে হলের প্রভোস্ট শামীম আখতার হলের অফিস ক্লার্ক এনামুলকে দিয়ে অনিককে ডেকে নিয়ে যান। সেই ডাক ছিল তার জীবন তছনছ করে দেওয়ার।
‘নাস্তা করানো ও লাইব্রেরির বিষয়ে কথা বলার নাম করে আমাকে ডেকে নেন শামীম স্যার। পরে তার সঙ্গে নাস্তা করা শেষে গল্লামারী ঘোষ ডেইরির সামনে নিয়ে একটি কালো মাইক্রোবাসকে ইশারা করে আমাকে দেখিয়ে দেন। মাইক্রোবাসটি থেকে ৬-৭ জন সাদা পোশাকধারী আমাকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। আর এরপরই আমার জীবনের গল্পটা মুহূর্তেই পাল্টে যায়, রাতারাতি আমি বনে যাই জেএমবির সক্রিয় সদস্য’, ঘটনা সম্পর্কে এমনই ভাষ্য অনিকের।
খুলনা জেলা কারাগারে বন্দীদের সপ্তাহে একদিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। সেই সুযোগে পরিবারের মাধ্যমে ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী অনিক ও রাফির ভাষ্য জানতে পারে বাংলানিউজ। গুম হওয়ার দিনের বর্ণনা দেন তারা।
ছেলের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনিকের বৃদ্ধ বাবা। বয়সের ভার তাকে ছুঁতে না পারলেও চার সদস্যের পরিবারের দায়িত্বভারে তিনি এখন ন্যুব্জ। আশা ছিল পরিবারের বড় ছেলে অনিক লেখাপড়া শেষ করে সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু ছেলের জন্য গত পাঁচ বছরে শত জায়গায় ছুটতে গিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা গচ্চা গেছে তার পরিবারের।
‘৮ জানুয়ারি কারা কীভাবে কখন আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়, কিছুই আমরা জানতে পারিনি। সন্ধ্যায় আমার ছেলের রুমমেট এহসুন নেওয়াজ আমাদের জানায় যে, আমার ছেলের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা হলের প্রভোস্ট শামীম স্যারকে বিষয়টি জানাই। কিন্তু তখনো আমরা জনতাম না যে, ওই শিক্ষকই আমার বুকের মানিকের গুম হওয়ার ঘটনায় জড়িত!’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন অনিকের বাবা আব্দুর রহমান।
১৭ দিন ‘গুম’ রাখার পর সন্ত্রাসী পরিচয়ে তোলা হয় আদালতে
ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে আর্তনাদ করতে করতে অনিকের মা বলেন, ‘আমার ছেলেকে ১৭ দিন গুম করে রাখার পর খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে বলা হয়—সে সন্ত্রাসী, সে জেএমবির সক্রিয় সদস্য। অথচ আমার ছেলে কখনোই এমন কোনো সঙ্গের সাথে মেশেনি। শুধু সরকারবিরোধী ফেসবুক স্ট্যাটাসের জন্যই তাকে ফ্যাসিস্ট সরকার এভাবে ধরে নিয়ে গেছে। ’
আরেক ভুক্তভোগী মোজাহিদুল ইসলাম রাফি দুই ভাইয়ের মধ্যে বড়। তাকে নিয়ে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের স্বপ্নটা ছিল আরও অনেক বড়। কিন্তু গুম ও মিথ্যা মামলায় সে আশায় গুড়েবালি। উল্টো রাফিকে কারামুক্ত করতে কয়েক বছরে পরিবারটির প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। এতে সামাজিক ও আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে গেছে তার পরিবার।
অনুসন্ধান করতে গিয়ে বাংলানিউজের প্রতিবেদক কথা বলেন অনিকের রুমমেট এহসুন নেওয়াজের সঙ্গে। তিনি জানান, সেদিন সকালে হলের প্রভোস্টই হলের সেকশন অফিসার শেখ এনামুল কবিরকে দিয়ে অনিককে ডেকে নিয়ে যান।
এহসুন নেওয়াজ বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস ছিল অনিকের। তাই অত সকালে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়ায় তার সঙ্গে আমার কথা হয়নি। রাতেও যখন সে ফিরছিল না তখন আমরা হল প্রভোস্টকে জানাই। তখন তিনি অনিককে ডেকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কোনো কথাই আমাদের জানাননি। তিনি ছাত্র বিষয়ক পরিচালক লিমন স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে আমাদের ছাত্রদের অনেক পীড়াপীড়িতে লিমন স্যার জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে অনিককে ধরে নিয়ে গেছে। কিন্তু কী অভিযোগ, কোনো ওয়ারেন্ট দেখিয়েছে কি না, এমনকি কোথায় নিয়ে গেছে—সেসব বিষয়ে জানতে চাইলে লিমন স্যার আমাদের কিছুই বলতে পারেননি। তখন আমরা ঘটনার প্রতিবাদ করি। কিন্তু তৎকালীন প্রশাসন আমাদের কোনো প্রতিবাদই আমলে নেয়নি। ’
সকাল ৮টায় অনিককে তুলে নেওয়ার পর তাকে সঙ্গে নিয়ে কালো মাইক্রোবাসটিতে দুপুর ২টায় হল রোড থেকে তুলে নেওয়া হয় অনিকের বন্ধু রাফিকেও। মাইক্রোবাসটিতে ছিলেন বগুড়ার এএসপি আরিফুর রহমান মন্ডল, বগুড়া থানার এসআই জুলহাস, এএসআই ওয়াদুদ, ওসি নূরে আলম এবং এএসপি ওয়াহিদসহ কয়েকজন সাদা পোশাকধারী। দুই শিক্ষার্থীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে খুলনার বিভিন্ন জায়গায় চক্কর দেন তারা। এরপর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় তাদের খুলনা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাদের সারারাত রাখা হয় বলে অনিক ও রাফির ভাষ্য জেনেছে বাংলানিউজ। তাদের বক্তব্য, সেখান থেকে ৯ জানুয়ারি দুজনকে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে নিয়ে গোপন কারাগারে (গোপন টর্চার সেল) ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত গুম করে রাখা হয়। পরে ২৪ জানুয়ারি তাদের আবারও খুলনা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসা হয়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদ হোসেন বলেন, ‘তৎকালীন ভিসি ও প্রভোস্ট শামীম আক্তারসহ কয়েকজনের সহযোগিতায় ভাইদের জোরজবরদস্তি করে হল থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ১৭ দিন গুম রেখে ২৫ জানুয়ারি পুলিশ তাদের খুলনা থানার মিথ্যা মামলায় আসামি সাজিয়ে গ্রেপ্তার দেখায়। ’
দুই শিক্ষার্থীর গুম ও মিথ্যা মামলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু হলের তৎকালীন প্রভোস্ট শামীম আক্তার কথা বলার উদ্দেশ্যে ডেকে নিয়ে অনিককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেন। পরবর্তীতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা তিনি। দুই শিক্ষার্থীর গুমের বিষয়ে জানতে তৎকালীন ভিসি ড. ফায়েকুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তিনি পলাতক থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
তবে কথা হয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফ হাসান লিমনের সঙ্গে। এই শিক্ষকও ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে দুই শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ। দুই শিক্ষার্থীকে তুলে নেওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক শরীফ হাসান লিমন বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন। শিক্ষার্থীদের অভিভাকদের জানানো হয়েছিল যে, তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই শিক্ষার্থীকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল, তা জানতেন না বলে দাবি করেন এই শিক্ষক। জানার চেষ্টা করেছিলেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তৎকালীন ভিসির মাধ্যমে মৌখিকভাবে তিনি জানার চেষ্টা করেছিলেন।
দুই শিক্ষার্থীর নিখোঁজের ঘটনায় ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে কেন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি জানতে চাইলে অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফ হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের তো ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিয়ে যায়নি! তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে নেওয়া হয়েছে।
অথচ এ ঘটনা তদন্তে গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, শিক্ষার্থী অনিককে হল থেকে ডেকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আর বিষয়টি ছাত্র বিষয়ক পরিচালক জানতেন।
‘যদি ধরেও নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে; তাহলেও কি এ বিষয়ে ছাত্র বিষয়ক পরিচালক নীরব ভূমিকায় থাকতে পারেন? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনোরকম তদন্ত না করে নীরব ভূমিকা পালন করতে পারে?’ প্রশ্ন তোলেন অনিকের বাবা।
শিক্ষার্থীদের জীবন নষ্টে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হবে: উপাচার্য
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফ হাসান লিমন সাবেক ভিসির অনুরোধে আহসানউল্লাহ হলের তৎকালীন প্রভোস্ট অধ্যাপক আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফকে শিক্ষার্থী মোজাহিদুল ইসলামকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে ও তার ব্যবহৃত ল্যাপটপটি নিয়ে আসতে বলেন। তবে অধ্যাপক আবু শামীম সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য ড. রেজাউল করিম বলেন, দুই শিক্ষার্থীর মামলাটি বিচারাধীন। আশা করি, বর্তমান প্রশাসন এর সঠিক বিচার করবে। যারা তাদের জীবন নষ্ট করেছে এবং সমাজের চোখে তাদের অপরাধী বানিয়েছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
তৎকালীন ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক শরীফ হাসান লিমনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, মামলায় সঠিক বিচার হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেই অনুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সাত মামলা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুমের শিকার এ দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মোট সাতটি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে খুলনার সোনাডাঙা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ৮/৯/১০ ধারায় মামলা, ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৪ ধারায় মামলা; আওয়ামী লীগের অফিসে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে খান জাহান আলী থানার ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ৩/৬ ধারায় মামলা, জীবন ও সম্পত্তি বিপন্ন করার উদ্দেশ্যে বিস্ফোরণ মামলা; আড়ংঘাটা থানার গাড়ির গ্যারেজে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩/৬ ধারায় মামলা এবং ময়মনসিংহে ২০১৯ সালের বিস্ফোরণের একটি ঘটনায় জেএমবি সংশ্লিষ্ট মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা রয়েছে।
দুই শিক্ষার্থীর গুম ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয় বগুড়ার তৎকালীন এএসপি (পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জের এএসপি) আরিফুর রহমান মন্ডলের সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক গুমের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে হওয়া দুটি মামলা নিয়ে তিন বছর যাবত খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তাদের পক্ষে লড়ছেন সিনিয়র আইনজীবী বেগম আক্তার জাহান। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এসটিসি ১১/২০, এসটিসি ১৪/২০ বিস্ফোরক দ্রব্য মামলা দুটির পুরোটাই বানোয়াট।
খান জাহান আলী থানার আওয়ামী লীগের অফিসের যে ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, আদতে সেটি ছিল আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। আর আড়ংঘাটা থানার অভিযোগটিও মিথ্যা, যা প্রমাণিত। কিন্তু আওয়ামী শাসনামলে ফরমায়েশি বিচার ব্যবস্থা থাকায় এ দুই শিক্ষার্থী এত বছরেও ন্যায়বিচার পাননি বলে মন্তব্য করেন এই আইনজীবী।
গুম করার ছয় মাস আগের মামলায় দেখানো হয় গ্রেপ্তার
অন্যদিকে ময়মনসিংহে ২০১৯ সালের ঘটনায় জেএমবি সংশ্লিষ্ট যে মামলায় দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার দেখানো সেটি রুজু হয় ৬ মাস আগে। এই মামলার চার আসামির মধ্যে অনিক ও রাফির নাম রয়েছে এবং এ মামলার একজন অভিযুক্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক। দুই আসামি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে অনিক ও রাফির নাম উল্লেখ নেই। এমনকি জবানবন্দি দেওয়া বাকি দুই আসামি দুই শিক্ষার্থীকে চেনেন না বলেও জানিয়েছেন ময়মনসিংহ জর্জ কোর্টের আইনজীবী এ কে এস শওকত হোসেন মুরাদ।
ফ্যাসিস্ট শাসনামলে শত শত গুমের ঘটনার তথ্য আসছে গুম কমিশনের কাছে। প্রতিটি ঘটনাই শিউরে ওঠার মতো। তবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর গুমের অভিযোগটি এখনো গুম কমিশনে আসেনি বলে জানান কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন। বাংলানিউজের মাধ্যমে এটাও আমলে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বলেন, প্রতিটি গুমের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যেন ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এমন ঘটনা অন্তত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা আর না ঘটে।