Image description

জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দেশের শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বড় পরিসরে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সহিংসতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ইউজিসি ‘সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট মিলিয়ে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১০ হাজার শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। ধাপে ধাপে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে ইউজিসি।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে ইউজিসি ও ইউনেসকোর যৌথ সহযোগিতায়। ইতিমধ্যেই দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাম্প্রতিক সহিংসতার শিকার শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা এবং শিক্ষাজীবনে মনোযোগ ফিরিয়ে আনার সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা।


প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পাইলট কার্যক্রম চালু করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও এ উদ্যোগের আওতায় আসবে। ইউজিসি আশা করছে, এই প্রকল্প শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সহানুভূতিশীল, নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে টেকসই শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে এটি হবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা ইউনেসকোর সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসেবে অনকগুলো মিটিং করেছি। এখানে আমরা যেটা করছি, মানসিক হেলথ এবং শিক্ষার্থীর যে কল্যাণ হেলথিং, সেটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা প্রথমে নিড অ্যাসিস্ট করছি। সেটাও শেষ হয়ে গেছে। মেন্টাল হেলথের কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করে তাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিত, মানে যে বিষয়গুলো জরুরি। একটা ছেলে বা মেয়ে ক্লাস করতে পারছে না, ডিপ্রেসনে আছে অথবা দেখা গেছে যে, সে মনোযোগ দিতে পারছে না।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই মুভমেন্টের কারণে তারা যে রক্ত দেখেছে, মারামারি দেখেছে। এ ব্যাপারগুলো তাদের যে পরিমাণ কষ্ট দিচ্ছে, সে কষ্টগুলো আমরা চিহ্নিত করার যে প্রক্রিয়া, সেটাও শেষ করেছি। রিপোর্ট শেষ হওয়ার কথা। রিপোর্ট অ্যাসিস্ট করে মডিউল তৈরি করে আমরা আগামী মাস থেকে ট্রেনিংয়ে চলে যেতে পারব।’


অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘আমাদের মূল ফোকাস ছিল জুলাই মুভমেন্টে। যেসব ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভিকটিম হয়েছে বা আন্দোলনে আহত হয়েছে বা যেসব এলাকায় আন্দোলন বেশি হয়েছে এবং সেটার সাথে সাথে দেখা গেছে যে, আমরা কিছু টপ গ্রেডের ইউনিভার্সিটি নিয়েছি। কিছু নিয়েছি ঢাকার বাইরের ইউনিভার্সিটি, কিছু নিয়েছি স্পেশালাইজড ইউনিভার্সিটি। এভাবে বিভিন্ন ক্রাইটেরিয়া সেট করে ইউনিভার্সিটিগুলো সিলেক্ট করা হয়েছে। শুরুতে ১০ হাজার শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ হবে। এটার ওপর ভিত্তি করে আরও বড় আকারে যাব।’