Image description
এনসিপি পেছনে টেনে ধরতে চায় ‘ভোটের রশি’

বিএনপি ডিসেম্বর, জামায়াত ফেব্রুয়ারি এবং অন্যরা চায় আগামী রোজার আগে ভোট :: নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে ‘জুলাই মাসের মধ্যে নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করা হবে’ :: নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে ধোঁয়াশা না কাটলেও গ্রামেগঞ্জে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে
‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশ ভালই চালাচ্ছেন। ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলছেন। রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ঘুষ-দুর্নীতি কমেছে, আইন শৃংখলাও ভাল। কিন্তু নির্বাচনের খবর কী?’ রাজধানী ঢাকা থেকে যারা গ্রামে যাচ্ছেন তাদের প্রায়ই এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিশেষ করে গণমাধ্যমকর্মী ও রাজনৈতিককর্মী হলে তাদের কমন এ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরে ঈদ করতে গ্রামে গেছেন এমন ১০ জন জানিয়েছেন তারা ‘নির্বাচন কতদূর’, ‘নির্বাচনের খবর কী’, ‘যথাসময়ে নির্বাচন হবে নাকি সংস্কারের পর নির্বাচন’ এ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন। আবার কেউ কেউ ‘অন্তর্বর্তী সরকার ৫ বছর ক্ষমতায় থাকবে কি না’ তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। মূলত হাসিনা পালানোর পর থেকে নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য মানুষ যেন মুখিয়ে রয়েছেন। বিভিন্ন জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মী ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, গ্রামগঞ্জে নির্বাচনে আমেজ শুরু হয়ে গেছে। মানুষ ধরেই নিয়েছে এবার হাসিনার শাসনামলের মতো পাতানো নির্বাচন নয়, জনগণ ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। ড. ইউনূস কিছু সংস্কার করেই দ্রুত নির্বাচন দিয়ে বীরের বেশে ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন। নির্বাচনে কারা কোন দলের প্রার্থী হচ্ছেন, মনোনয়নের জন্য কারা দৌড়ঝাঁপ করছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা। সকাল-বিকেল হাট বাজারে চায়ের দোকানে আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তুই হচ্ছে নির্বাচন। রাজধানী ঢাকায়ও একই চিত্র। বিএনপি ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি জানালেও জামায়াত ইতোমধ্যেই দলীয় প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে। অন্যান্যরাও নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার এবং প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কার ইস্যুতে সংলাপ চালালেও প্রায় অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল ডিসেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারির মধ্যে ভোট হবে এমন ধারণা নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ‘সংস্কার ইস্যু’তে কচ্ছপ গতিতে কেতাবি ঢংয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো ওই কচ্ছপ গতির সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ চায় না। দেশের প্রায় অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল চায় আগামী ডিসেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রæয়ারির (রোজার আগে) মধ্যে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনও ঘোষণা দিয়েছে জুলাই মাসের মধ্যে নির্বাচনী কর্ম পরিকল্পনা ঘোষণা করা হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার দু’মাস আগেই জানিয়েছেন সরকার যখনই নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশনা দিবে তখন ইসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। দিল্লির পুতুল হাসিনা পালানোর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে সাধারণ ভোটাররা ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। গণমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে অফিস-আদালত, হাট-বাজার, মাঠ-ঘাট সর্বত্রই মানুষের মধ্যে আলোচনা নির্বাচন কতদূর। দীর্ঘ ১৫ বছর জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দিতে না পেরে মানুষ ভোট দেয়ার জন্য উদগ্রীব। সংস্কার ইস্যুতে নির্বাচনের টাইমফ্রেম নিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এতোদিন মতভেদ থাকলেও এখন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মধ্য ফেব্রæয়ারির মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে দলগুলো একাট্টা। তাদের মতে আবহাওয়া ও জলবায়ুর গতিপ্রকৃতির কারণে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারি দেশে নির্বাচনে জন্য অনুকূল পরিবেশ। কার্যত এই সময় নির্বাচনী মৌসুম। আগামী ফেব্রæয়ারির শেষ দিকে রমজান শুরু এবং মার্চে ঈদ। অতঃপর এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা। মে মাসে ঈদুল আজহা। এ সময় বর্ষা মৌসুম। এইচএসসি পরীক্ষা জুলাই-আগষ্টে। অতএব ডিসেম্বর এবং জানুয়ারিই জাতীয় নির্বাচনের উপযুক্ত সময়। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে দলগুলো নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, ‘নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। ভোট না হওয়া পর্যন্ত এ ট্রেন থামবে না’। কিন্তু সে নির্বাচনী ট্রেন থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র সমন্বয়কদের নেতৃত্বে গড়া নতুন রাজনৈতিক দল কিংস পার্টি খ্যাত জাতীয় নাগরিক পার্টি। দেশের রাজনীতিতে নতুন বন্দোবস্তের ঘোষণা দিয়ে নতুন দল গঠন করলেও এখন পর্যন্ত জাতির সামনে নতুনত্ব কিছু হাজির করতে পারেনি। বরং নতুন দলের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, নিয়োগ-বদলী বাণিজ্যের অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। সংস্কারের নামে দলটির নেতারা নিজেদের দল গোছানোর লক্ষ্যে বেশি সময়ের জন্য সংস্কারের পর নির্র্বাচন দাবি করছে। কিন্তু দল গঠনের পর নানা বিতর্কে জড়ানো এবং গণমাধ্যমের খবরে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করলেও জনগণের মধ্যে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। ফলে নতুন দল কি দাবি করছে সেদিকে ভ্রæক্ষেপ নেই ভোটারদের।

জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সংস্কারের জন্য নির্বাচন ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। গণতন্ত্রের জন্য, ভোটাধিকারের জন্য ১৫-১৬ বছরের যে সংগ্রাম, সে ভোটাধিকার নিয়ে কেন এতো বিলম্ব হচ্ছে, কেন নির্বাচনের বিকল্প হিসেবে সংস্কারকে দাঁড় করাচ্ছেন। আমরা ভোটের কথা বললেই আরও কিছুকে বিকল্প হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন। গণতন্ত্র মানেই তো নির্বাচন। বিভিন্ন কমিশন গঠন করেছেন রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনী ওয়াদা কেন ডিসেম্বর-জুনের এক ধরনের দোলনায় ঝুলছে। সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা ডিসেম্বর আর জানুয়ারির মধ্যে পেন্ডুলামের মতো দোল খাচ্ছে কেন। এটা তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাব দেয়া দরকার।

সংস্কার ও নির্বাচনের টাইমফ্রেম ইস্যুতে এতোদিন বিএনপি ও জামায়াত কার্যত বিপরীতমুখী অবস্থানে ছিল। বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করলেও জামায়াত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে সুর মিলিয়ে পুরোপুরি সংস্কারের পর নির্বাচনের কথা বলেছে। এর মধ্যে খবর বের হয়েছে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান লÐনে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে কি আলোচনা হয়েছে তা জানা না গেলেও জামায়াত নির্বাচনের টাইমফ্রেম ইস্যুতে ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে আগামী ফেব্রæয়ারি মাসের মাঝামাঝি নির্বাচনের দাবি করছেন। শুধু তাই নয়, গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমীর নির্বাচনের কমিটমেন্ট নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ নতুনভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে। এ অবস্থায় দেশে নির্বাচন হওয়ার আগে তিনটি শর্ত পূরণ হতে হবে। মৌলিক সংস্কার, সহাবস্থানসহ নির্বাচনের শর্ত পূরণ করতে হবে। তা নাহলে নির্বাচনের কমিটমেন্ট ঠিক থাকবে কি না তা আল্লাহই জানেন।

গত ১৬ এপ্রিল রাজধানীর গুলশানে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহŸায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, মৌলিক সংস্কার ছাড়া এনসিপি নির্বাচনে যাবে না। মার্কিন ক‚টনীতিকদের আমরা বলেছি, মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অংশগ্রহণ করবে কি না, সেটি বিবেচনাধীন থাকবে। মূলত ৫ আগস্টের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া তরুণ নেতারা নতুন দল গঠন করে তেমন সাড়া পাচ্ছেন না। উল্টো সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিজেদের জড়িয়ে বিতর্কের জন্ম দিচ্ছেন। পাশাপাশি দলটি এখনো নিবন্ধন পায়নি। গতকাল নির্বাচন কমিশনে নতুন দল নিবন্ধনের সময়সীমা ৩ মাস বাড়াতে আবেদন করেছে এনসিপি। নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেন দলের এনসিপির যুগ্ম আহŸায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজন‚ভা জাবীন এবং সদস্য মনিরুজ্জামান।

সরকারের স্বল্প সংস্কারে ডিসেম্বর এবং বড় সংস্কারে জুনের নির্বাচনের কথাবার্তায় কার্যত নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সরকারের কাল বিলম্বের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই’। কিন্তু কয়েকজন উপদেষ্টার কর্মতৎপরতা ও কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছে সংস্কারের নামে নির্বাচন নিয়ে কালক্ষেপণ করা হতে পারে। তবে বিএনপি, জামায়াত, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলীয় সমমনা দল, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামী আন্দোলন, জাসদ, বাসদ, সিপিবিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল ডিসেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারির মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে। দলগুলোর দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন করা না গেলে ফেব্রæয়ারি প্রথম দিকে নির্বাচন হতেই হবে। নির্বাচন জনগণের নাগরিক অধিকার। ফ্যাসিস্ট হাসিনা বছরের পর বছর নির্বাচনের নামে নাটক করায় জনগণ ভোট থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সে কারণে তাকে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্ট বিতাড়িত করা হয়েছে। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এজন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ‘সংস্কার ইস্যু’ দ্রæত এগিয়ে নিতে হবে।

জানতে চাইলে বিএনপির সমমনা জোটের নেতা ও গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেন, নির্বাচন ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে ফেব্রæয়ারির মধ্যে নির্বাচন না দিলে ভোট ঝুলে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকারের এনজিও মার্কা অনেক কর্মকর্তা ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছেন। প্রধান উপদেষ্টার সরলতার সুযোগ নিয়ে তারা নির্বাচন পেছানোর বাহানা করছেন। তবে আমার মনে হয় নির্বাচন ফেব্রæয়ারির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দাবি করেছে ১২ দলীয় জোট। বিবৃতিতে জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গত কয়েক মাস ধরে বলে আসছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু বিএনপিসহ ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি বারবার আহŸান জানিয়েছি। তিনি বলেন, বুধবার প্রফেসর ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী ডিসেম্বরে এবং সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরা মনে করি, সরকারের উচিত অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা।

সরকারের উচিত জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা যাতে কোনোভাবেই চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস অতিক্রম না করে সে ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিশ্চয়তা প্রদান করা। নির্বাচন যদি নানা বাহানায় ডিসেম্বরের পরে চলে যায়, বা দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে দেশে নানা সংকট দেখা দিতে পারে।