
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এ সরকার গত (আওয়ামী লীগ) সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা স্থগিত করেছে। কিন্তু এর বিপরীতে কোনো মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়নি। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাচ্ছেন না। এমনকি যে নীতিগুলো এখন নেয়া হচ্ছে, সেগুলোর ধারাবাহিকতা থাকবে কিনা, সেটি নিয়েও সংশয় আছে।
৫ আগস্টের পর দেশে সংবিধান, পুলিশ, স্থানীয় সরকার, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের আলাপ হয়েছে। কিন্তু গত ছয়-সাত মাসে অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে খুব বেশি কিছু করা হয়েছে কি? এমন প্রশ্ন তুলেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘৬ষ্ঠ বাংলাদেশ ইকোনমিকস সামিট ২০২৫’-এর শেষ অধিবেশনে এসব কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ঢাবি অর্থনীতি বিভাগের ইকোনমিকস স্টাডি সেন্টার তিন দিনব্যাপী সামিটের আয়োজন করে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এ সরকার গত (আওয়ামী লীগ) সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা স্থগিত করেছে। কিন্তু এর বিপরীতে কোনো মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়নি। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাচ্ছেন না। এমনকি যে নীতিগুলো এখন নেয়া হচ্ছে, সেগুলোর ধারাবাহিকতা থাকবে কিনা, সেটি নিয়েও সংশয় আছে।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে অন্তত দুই বছরের জন্য একটি মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল জানিয়ে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, আমরা বলেছি, একটি মধ্যমেয়াদি, লক্ষ্য নির্দিষ্ট ও সুস্থির নীতিকাঠামো না থাকলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ হয় না। এখন ব্যক্তি খাতের সবাই বলছেন, এই সরকার কত দিন আছে, তা তো জানি না। তাই এখন কীভাবে বিনিয়োগ করব।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কথা যতক্ষণ না সামনে আসছে ততক্ষণ প্রকৃত সংস্কার হবে না। সংস্কারে মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরতা কমানো, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার ওপর জোর দেয়ার কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সিপিডির আরেক সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জুলাই আন্দোলনের পেছনে অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল অর্থনৈতিক বৈষম্য। বিগত সরকারের সময় অর্থনৈতিক সুবিধা হিসাব না করে অনেক বিনিয়োগ করা হয়েছিল; প্রকল্পের ব্যয় বহু গুণ বাড়ানো হয়েছিল। অথচ উন্নয়ন বাজেটের প্রায় পুরোটাই ছিল ঋণনির্ভর। এসব নিয়ে তখন প্রশ্ন করা যায়নি। তবে সুশাসনের প্রয়োজনে ভবিষ্যতে এসব নিয়ে প্রশ্ন করতে হবে।
সমাপনী অধিবেশনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারপারসন মাসুদা ইয়াসমিন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান।